সারা বছর জুড়েই আমরা কম বেশি গরুর মাংস খেয়ে থাকি। তবে সারা বছর আমরা যে পরিমাণ গরুর মাংস খাই তার চেয়েও বেশি
পরিমাণ গরুর মাংস খাওয়া পড়ে কুরবানির ঈদের ২-৩ দিনে। তবে মাংসের ভালো ও মন্দ দুটো দিকই রয়েছে।
ভালো দিক ►
★ মাংস
প্রাণীজ প্রোটিন বা আমিষ। খাদ্য
মূল্যের দিক থেকে উদ্ভিদ প্রোটিনের তুলনায় উন্নতর। মাংস সুস্বাদুও বটে। এতে সমস্ত
এমাইনো এসিড বিদ্যমান। এছাড়া
আছে লৌহ, ফসফরাস, ভিটামিন বি১ ও ভিটামিন বি২।
★ কোলেস্টেরলের
পরিমাণ বেশি থাকলেও গরু ও খাসীর কলিজায় লৌহের পরিমাণও বেশি থাকে। এছাড়া মগজে কোলেস্টেরলের পরিমাণ থাকে ১০০%।
★ দেহে
প্রোটিনের ঘাটতি পূরণের জন্য এবং কৃশকায় লোকদের ওজন বাড়ানোর জন্য মাংস প্রয়োজন।
★ দেহের
ক্ষত, পোড়া ঘা
সারানোর জন্য জিঙ্ক প্রয়োজন। এই জিঙ্ক
পাওয়া যাবে মাংস থেকে। এই কারণে
নিরামিষ ভোগীদের খাবারে জিঙ্কের অভাব হয়ে থাকে। আবার খেলোয়াড়দের খেলাধূলা করার সময় প্রচুর ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বেশ জিঙ্ক বের হয়ে যায়। এ কারণে তাদের খাবারে মাংসের পরিমাণ বাড়ালে এর অভাব অনেকটা
পূরণ হয়।
মন্দ দিক ►
★ মাংসে
অবস্থানকারী রোগ জীবানু দেহে বিষ উৎপন্ন করে। যা খাওয়ার ফলে রোগের সৃষ্টি হয়। এর জন্য প্রয়োজন রোগ জীবানুমুক্ত মাংস খাওয়া। রোগ জীবানু দ্বারা মাংস বিষাক্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো
রোগাক্রান্ত পশু জবাই করা। তাই
কুরবানির পশু নির্বাচনের সময় এ দিকটি অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। আবার সংরক্ষণের অজ্ঞতাও মাংসকে দূষিত করে। যদি রান্না করা মাংস সংরক্ষণ করতে ইচ্ছা থাকে তাহলে তাড়াতাড়ি
ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দেয়াই উত্তম, কারণ মাংসের মধ্যে সহজেই ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে।
★ টিনিয়া
সেলিনাস নামক প্যারাসাইট রেড মিটে থাকে। এটা দেহে
বিশেষ এক ধরণের টিবির জন্ম দেয়। এ জাতীয়
জীবানু অন্ত্র, পাকস্থলী, যকৃত প্রভৃতি জায়গায় প্রবেশ করে
আমাদের অসুস্থ করে তোলে। অধিক
পরিমাণ অর্ধসিদ্ধ মাংসই এ ধরণের রোগের বিস্তার ঘটায়।
★ মাংসে
ট্রাইসেরাইড, কোলেস্টেরল
ও পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে বলে হূদরোগ, বাত, উচ্চ
রক্তচাপ এর রোগীদের কম খাওয়া বা পরিহার করা উচিত।
★ আবার
লিভার, গলব্লাডার
ও প্যানক্রিয়াসের অসুখে প্রাণীজ চর্বি বাদ দেয়াই ভালো। তাই মাংসের সংরক্ষণের সময় মনে রাখতে হবে যাতে এর স্বাভাকি
স্বাদ ও গন্ধ বজায় থাকে। টুকরা বড়
করলে খাদ্য মূল্যের অপচয় কম হয়। তাপে
থাকমিন নষ্ট হয় ৩০% আবার রাইয়োফ্লভিন নষ্ট হয় ২০%।
★ অস্বাস্থ্যকর
উপায়ে রান্না করা মাংস থেকে ফিতা কৃমি হয়। এর ফলে
পেট ব্যথা, খিঁচুনী, মাথা ধরা, পেট খারাপ ও জ্বর হতে পারে।
খাদ্য হিসেবে মাংসের স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকর দু'টি দিকই রয়েছে। এই দু'দিক
বিবেচনা করেই গোসত খাওয়া উচিত।
[আপনাদের সুখী জীবন আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।]
0 comments:
Post a Comment