জীবন ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে উদ্ভূত মানসিক চাপ
বিষন্নতার জন্য দায়ী । সহজভাবে বলতে গেলে, জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত হতে উদ্ভূত মানসিক চাপের কারণেই বিষন্নতার সৃষ্টি হয়। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এই মানসিক চাপ বিষন্নতার ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না।
গবেষকরা দেখেছেন, কোনো শিশু যদি এগারো বছর বয়সের আগে তার মা-বাবার যেকোনো একজনকে হারায় তবে তার বড় হয়ে বিষন্নতা বা অবসাদে ভোগার আশঙ্কা খুব বেশি। এ ছাড়া এটা প্রায়ই দেখা যায়, বিশেষ কোনো ক্ষতি হলে বা বিশষ কিছু হারালে মানুষ বিষাদে আক্রান্ত হয়। যেমন কোনো নিকটাত্মীয় বা স্বজন হারালে বা মৃত্যু হলে, হঠাৎ বেশি টাকার কোনো লোকসান হলে, চাকরি হারালে বা অবসর নিলে, বিবাহ বিচ্ছেদ বা ভালোবাসায় বিচ্ছেদ হলে, এমনকি পরীক্ষায় অসফল হলে। তবে একেক মানুষ একেক কারণে বিষাদগ্রস্ত হয়। কোন মানুষ কোন কারণে বিষাদগ্রস্ত হয় এটা নির্ভর করে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার ওপর।
# মুক্তির উপায় :-
কাঁদুন প্রাণ খুলে - প্রকাশ যত তীব্র হয়, দুঃখ তত লাঘব হয়। ছানার মৃত্যুতে মা হরিণ হৃদয়বিদারক কান্নায় চিৎকার করে তার বেদনা লাঘব করতে চায়। তেমনি যারা কাঁদতে পারেন তাদের দুঃখ কখনও স্থায়ী হয় না। এ কারণেই কান্না জরুরি। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন দুঃখ-বেদনা, মানসিক আঘাত ইত্যাদি দেহে টক্সিন বা বিষাক্ত অণু সৃষ্টি করে। আর কান্না এই বিষাক্ত অণুগুলোকে শরীর থেকে বের করে দেয়। মানসিক চাপ ভারসাম্য নষ্ট করে আর কান্না ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে। না কাঁদলে মানসিক চাপ শরীরে থেকেই যায়। আমরা অনেক সময় কান্নাকে লজ্জাজনক ভাবি, আবার অনেক মানুষ আছেন যারা কান্নাকে "মেয়েলিপনা" মনে করেন। অথচ কান্না হলো একটি মানবীয় ব্যাপার। কান্না সহানুভূতি ও মমত্বকে আকর্ষণ করে। অশ্রু মমত্ব বাড়ায়।
# আর্টস থেরাপি :-
বিষাদ থেকে মুক্তির অন্যতম আধুনিক উপায় হচ্ছে আর্ট থেরাপি। নিজের কষ্ট নিজের মধ্যে আবদ্ধ রাখার কারণেই মূলত মানুষ বিষাদে ভোগে। অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা নিজেদের কষ্ট কারও সঙ্গে শেয়ার করতে কুণ্ঠা বোধ করে। আর এ কারণেই নিজের আঁকা ছবির মধ্যে নিজের কষ্টগুলো শেয়ার করাই হতে পারে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। এ ক্ষেত্রে ছবির শিল্পমান বা অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন নেই।
বেন স্কেয়ার্জ নামে এক লোক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ সময় তিনি "দ্য ম্যান ইন দ্য বক্স" শিরোনামে একটি ছবি আঁকলেন। ছবিটি আঁকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন - গ্রীষ্মকালে চরম অবসাদে ভুগছিলাম আমি। তখন আমার বয়স মাত্র পনেরো। অত:পর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবং কয়েক সপ্তাহ আঁকাআঁকিতে সময় কাটালাম এবং ছবির মাধ্যমে নিজের অবসাদ ও আবেগ , ইচ্ছা ও অসম্মতি প্রকাশের কাজ শুরু করলাম। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, আমি আমার বিষন্নতা, আবেগ ইত্যাদি যতটা ছবির মধ্যে ঢেলে দিচ্ছি, ঠিক ততটাই আমার মধ্য থেকে উধাও হচ্ছে। এর কিছুদিন পর পড়াশোনার মাধ্যমে আমি বুঝতে পারলাম, এটাকেই আর্ট থেরাপি বলে।
সম্প্র্রতি বেশ কয়েকটি গবেষণায় আরও জানা গেছে, সঙ্গীত বা মিউজিক বিষন্নতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এ ক্ষেত্রে ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক সবচেয়ে কার্যকর। একটি গবেষণায় বিভিন্ন রোগীকে প্রায় তিন মাস প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিকের মধ্যে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব রোগীকে ভালো মানের চিকিৎসা ও মিউজিক থেরাপি দুটোই দেওয়া হয়েছে, তাদের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।
# খাদ্যাভাস :-
বেশি পরিমাণ ভিটামিন জাতীয় খাবার মানসিক অবসাদ কমাতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ভিটামিন সি মানসিক চাপ কমায় এবং ভিটামিন বি নার্ভকে স্বাস্থ্যবান রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের তেলে ওমেগা-থ্রি আছে। অনেকের মতে, এটা অ্যান্টি-ডিপ্রেসনার বা মানসিক উদ্বেগ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
# শেষকথা : -
মন খারাপ কিংবা বিষন্নতা মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ। এটা থাকবেই। দুঃখ জীবনে আসতেই পারে। কিন্তু দুঃখগুলো যেন জমাট বাঁধতে না পারে। দীর্ঘস্থায়ী বিষন্নতার প্রভাব মারাত্মক। বিষন্নতায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি জীবনের কক্ষপথে লক্ষ্যহীন হয়ে পড়েন ; বেঁচে থাকার সকল প্রেরণা হারান। এমনকি কেউ কেউ অনেক সময় আত্মহত্যা পর্যন্ত করে থাকেন। যিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন তিনি একটি বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকেন। দার্শনিক কনফুসিয়াস চমৎকারভাবে বলেছেন - মন খারাপ হতেই পারে, কিন্তু মন খারাপ যেন বাসা না বাঁধে মনে।
গবেষকরা দেখেছেন, কোনো শিশু যদি এগারো বছর বয়সের আগে তার মা-বাবার যেকোনো একজনকে হারায় তবে তার বড় হয়ে বিষন্নতা বা অবসাদে ভোগার আশঙ্কা খুব বেশি। এ ছাড়া এটা প্রায়ই দেখা যায়, বিশেষ কোনো ক্ষতি হলে বা বিশষ কিছু হারালে মানুষ বিষাদে আক্রান্ত হয়। যেমন কোনো নিকটাত্মীয় বা স্বজন হারালে বা মৃত্যু হলে, হঠাৎ বেশি টাকার কোনো লোকসান হলে, চাকরি হারালে বা অবসর নিলে, বিবাহ বিচ্ছেদ বা ভালোবাসায় বিচ্ছেদ হলে, এমনকি পরীক্ষায় অসফল হলে। তবে একেক মানুষ একেক কারণে বিষাদগ্রস্ত হয়। কোন মানুষ কোন কারণে বিষাদগ্রস্ত হয় এটা নির্ভর করে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার ওপর।
# মুক্তির উপায় :-
কাঁদুন প্রাণ খুলে - প্রকাশ যত তীব্র হয়, দুঃখ তত লাঘব হয়। ছানার মৃত্যুতে মা হরিণ হৃদয়বিদারক কান্নায় চিৎকার করে তার বেদনা লাঘব করতে চায়। তেমনি যারা কাঁদতে পারেন তাদের দুঃখ কখনও স্থায়ী হয় না। এ কারণেই কান্না জরুরি। মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন দুঃখ-বেদনা, মানসিক আঘাত ইত্যাদি দেহে টক্সিন বা বিষাক্ত অণু সৃষ্টি করে। আর কান্না এই বিষাক্ত অণুগুলোকে শরীর থেকে বের করে দেয়। মানসিক চাপ ভারসাম্য নষ্ট করে আর কান্না ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে। না কাঁদলে মানসিক চাপ শরীরে থেকেই যায়। আমরা অনেক সময় কান্নাকে লজ্জাজনক ভাবি, আবার অনেক মানুষ আছেন যারা কান্নাকে "মেয়েলিপনা" মনে করেন। অথচ কান্না হলো একটি মানবীয় ব্যাপার। কান্না সহানুভূতি ও মমত্বকে আকর্ষণ করে। অশ্রু মমত্ব বাড়ায়।
# আর্টস থেরাপি :-
বিষাদ থেকে মুক্তির অন্যতম আধুনিক উপায় হচ্ছে আর্ট থেরাপি। নিজের কষ্ট নিজের মধ্যে আবদ্ধ রাখার কারণেই মূলত মানুষ বিষাদে ভোগে। অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা নিজেদের কষ্ট কারও সঙ্গে শেয়ার করতে কুণ্ঠা বোধ করে। আর এ কারণেই নিজের আঁকা ছবির মধ্যে নিজের কষ্টগুলো শেয়ার করাই হতে পারে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। এ ক্ষেত্রে ছবির শিল্পমান বা অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন নেই।
বেন স্কেয়ার্জ নামে এক লোক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ সময় তিনি "দ্য ম্যান ইন দ্য বক্স" শিরোনামে একটি ছবি আঁকলেন। ছবিটি আঁকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন - গ্রীষ্মকালে চরম অবসাদে ভুগছিলাম আমি। তখন আমার বয়স মাত্র পনেরো। অত:পর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবং কয়েক সপ্তাহ আঁকাআঁকিতে সময় কাটালাম এবং ছবির মাধ্যমে নিজের অবসাদ ও আবেগ , ইচ্ছা ও অসম্মতি প্রকাশের কাজ শুরু করলাম। আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, আমি আমার বিষন্নতা, আবেগ ইত্যাদি যতটা ছবির মধ্যে ঢেলে দিচ্ছি, ঠিক ততটাই আমার মধ্য থেকে উধাও হচ্ছে। এর কিছুদিন পর পড়াশোনার মাধ্যমে আমি বুঝতে পারলাম, এটাকেই আর্ট থেরাপি বলে।
সম্প্র্রতি বেশ কয়েকটি গবেষণায় আরও জানা গেছে, সঙ্গীত বা মিউজিক বিষন্নতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এ ক্ষেত্রে ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিক সবচেয়ে কার্যকর। একটি গবেষণায় বিভিন্ন রোগীকে প্রায় তিন মাস প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রুমেন্টাল মিউজিকের মধ্যে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব রোগীকে ভালো মানের চিকিৎসা ও মিউজিক থেরাপি দুটোই দেওয়া হয়েছে, তাদের অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে।
# খাদ্যাভাস :-
বেশি পরিমাণ ভিটামিন জাতীয় খাবার মানসিক অবসাদ কমাতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ভিটামিন সি মানসিক চাপ কমায় এবং ভিটামিন বি নার্ভকে স্বাস্থ্যবান রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাছের তেলে ওমেগা-থ্রি আছে। অনেকের মতে, এটা অ্যান্টি-ডিপ্রেসনার বা মানসিক উদ্বেগ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
# শেষকথা : -
মন খারাপ কিংবা বিষন্নতা মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ। এটা থাকবেই। দুঃখ জীবনে আসতেই পারে। কিন্তু দুঃখগুলো যেন জমাট বাঁধতে না পারে। দীর্ঘস্থায়ী বিষন্নতার প্রভাব মারাত্মক। বিষন্নতায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি জীবনের কক্ষপথে লক্ষ্যহীন হয়ে পড়েন ; বেঁচে থাকার সকল প্রেরণা হারান। এমনকি কেউ কেউ অনেক সময় আত্মহত্যা পর্যন্ত করে থাকেন। যিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হন তিনি একটি বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকেন। দার্শনিক কনফুসিয়াস চমৎকারভাবে বলেছেন - মন খারাপ হতেই পারে, কিন্তু মন খারাপ যেন বাসা না বাঁধে মনে।
0 comments:
Post a Comment