মা হওয়ার অনুভুতি সাধারণত স্বর্গীয় বলেই ধরে নেয়া হলেও গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত ১০ জনের মাঝে এক ১ জন মা গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতায় ভুগে থাকেন ও এর প্রভাবের শিকার হয় মা ও শিশু দুজনেই। আসুন আমরা আজকে এ সম্পর্কে জানি।
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের দেহে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তার কারণে ও অন্যান্য কারণেও মায়ের বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা বা অবসাদ্গ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা নিজেদের এ ধরণের সমস্যার ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু এমনটা যেন না হয়। মনে রাখতে হবে, আপনার দৈহিক সুস্থতার মতোই আপনার মানসিক সুস্থতাও একটি সুস্থ শিশুর জন্মলাভের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই গর্ভাবস্থায় আপনার যদি মনে হয় যে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন, দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কি কি বিষয় গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়?
১. যদি ইতিমধ্যে আপনি বিষণ্ণতায় অতীতে ভুগে থাকেন বা আপনার পরিবারের কারো এই সমস্যা থেকে থাকে। পূর্বে বিষণ্ণতা না থেকে থাকলেও আপনার পুরোপুরি সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় এই রোগে আক্রান্ত হবার।
২. সম্পর্কজনিত টানাপড়েন বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক ভাল থাকা খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে স্বামীরা বিশেষ ভুমিকা পালন করতে পারে। সাধারণ সময়ের চেয়ে এসময় ভবিষ্যৎ শিশু ও তার মায়ের কথা ভেবে স্ত্রীর প্রতি স্নেহ মমতা ভালবাসা পূর্ণ ব্যাবহারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য একথা মনে রাখা উচিৎ।
৩. যদি অক্ষমতাজনিত কারণে গর্ভধারণ করতে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় মায়েরা এক প্রকারের আতঙ্কে ভোগেন এবং এ থেকেও বিষণ্ণতা সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই চেষ্টা করবেন যতটুকু সম্ভব দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার।
৪. পূর্বে যদি কোন শিশু গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় মারা যায় বা গর্ভপাতের ইতিহাস থাকে।
৫. অতীত জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা, হতে পারে তা দৈহিক বা মানসিক বা যে কোন প্রকারের অনাকঙ্খিত স্মৃতি এসময় বেশি পীড়া দেয়। কাজেই চেষ্টা করতে হবে এধরণের কিছু যেন মনে না আসে। সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।
কীভাবে বুঝবেন আপনি বিষণ্ণ??
১. অকারণে কোন কিছু ভাল না লাগা।
২. শুন্য অনুভুতি বা ফাঁকা ফাঁকা লাগা।
৩. কোন কিছুতে মননিবেশ করতে ব্যর্থ হওয়া।
৪. ঘুমের সমস্যা হওয়া।
৫. খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন আসা। হতে পারে অতি ভোজন বা খাবারের রুচি নষ্ট হওয়া উভয়ই।
৬. সবসময় কোন কারণ ছাড়াই ক্লান্ত লাগা।
৭. নিজেকে যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ ছাড়াই দোষী ভাবা, মূল্যহীন ভাবা। এবং
৮. হঠাৎ করে মানসিকতার পরিবর্তন। হঠাৎ ভাল লাগা, বেশি বেশি কথা বলা। অকারণে বেশি অস্থির লাগা এমন যদি হয় তবে বুঝতে হবে আপনি "বাইপোলার ডিসঅর্ডার" এ ভুগছেন যার জন্য যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসা নেয়া অতি জরুরী।
এগুলোর মধ্যে যদি যেকোনো ৩ বা তার বেশি বৈশিষ্ট আপনার মধ্যে ২ সপ্তাহের বেশি অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন এবং আপনার সাহায্য দরকার।
শিশুর উপর মায়ের বিষণ্ণতার প্রভাবঃ
১. শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। বিষণ্ণতায় ভুক্তভোগী মা নিজের ঠিকমত যত্ন নিতে পারে না ফলে শিশুর বৃদ্ধিও বাঁধাগ্রস্থ হয়।
২. মা ও শিশুর মধ্যে যে স্বাভাবিক বন্ধন তা পরিপূর্ণরূপে বিকাশলাভ করতে ব্যর্থ হওয়া।
৩. এইসব শিশুরা সাধারণত জন্মের পরে অন্যান্য শিশুর চেয়ে কম প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ হয়। তারা অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতো কথাবার্তা, নড়াচড়ায় দেরী করে এবং অনেক সময় অনেকে ব্যর্থ পর্যন্ত হয়।
৪. শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের একটি বড় অংশের জন্য দায়ি তাদের মায়েদের গর্ভকালীন বিষণ্ণতা।
৫. কাজেই এই ব্যাপারটি আপাতদৃষ্টিতে অনেক সাধারণ মনে হলেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে কাজেই সকলেরই উচিৎ এ বিষয়ে সচেতন হওয়া। মনে রাখবেন, বিষণ্ণ মা, বিষণ্ণ শিশু। সুস্থ মা, সুস্থ শিশু। সকলের সুস্থতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের দেহে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তার কারণে ও অন্যান্য কারণেও মায়ের বিষণ্ণতা ও দুশ্চিন্তা বা অবসাদ্গ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা নিজেদের এ ধরণের সমস্যার ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু এমনটা যেন না হয়। মনে রাখতে হবে, আপনার দৈহিক সুস্থতার মতোই আপনার মানসিক সুস্থতাও একটি সুস্থ শিশুর জন্মলাভের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই গর্ভাবস্থায় আপনার যদি মনে হয় যে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন, দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কি কি বিষয় গর্ভাবস্থায় বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়ায়?
১. যদি ইতিমধ্যে আপনি বিষণ্ণতায় অতীতে ভুগে থাকেন বা আপনার পরিবারের কারো এই সমস্যা থেকে থাকে। পূর্বে বিষণ্ণতা না থেকে থাকলেও আপনার পুরোপুরি সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় এই রোগে আক্রান্ত হবার।
২. সম্পর্কজনিত টানাপড়েন বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্ক ভাল থাকা খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে স্বামীরা বিশেষ ভুমিকা পালন করতে পারে। সাধারণ সময়ের চেয়ে এসময় ভবিষ্যৎ শিশু ও তার মায়ের কথা ভেবে স্ত্রীর প্রতি স্নেহ মমতা ভালবাসা পূর্ণ ব্যাবহারের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য একথা মনে রাখা উচিৎ।
৩. যদি অক্ষমতাজনিত কারণে গর্ভধারণ করতে সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় মায়েরা এক প্রকারের আতঙ্কে ভোগেন এবং এ থেকেও বিষণ্ণতা সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই চেষ্টা করবেন যতটুকু সম্ভব দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার।
৪. পূর্বে যদি কোন শিশু গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় মারা যায় বা গর্ভপাতের ইতিহাস থাকে।
৫. অতীত জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা, হতে পারে তা দৈহিক বা মানসিক বা যে কোন প্রকারের অনাকঙ্খিত স্মৃতি এসময় বেশি পীড়া দেয়। কাজেই চেষ্টা করতে হবে এধরণের কিছু যেন মনে না আসে। সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।
কীভাবে বুঝবেন আপনি বিষণ্ণ??
১. অকারণে কোন কিছু ভাল না লাগা।
২. শুন্য অনুভুতি বা ফাঁকা ফাঁকা লাগা।
৩. কোন কিছুতে মননিবেশ করতে ব্যর্থ হওয়া।
৪. ঘুমের সমস্যা হওয়া।
৫. খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন আসা। হতে পারে অতি ভোজন বা খাবারের রুচি নষ্ট হওয়া উভয়ই।
৬. সবসময় কোন কারণ ছাড়াই ক্লান্ত লাগা।
৭. নিজেকে যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ ছাড়াই দোষী ভাবা, মূল্যহীন ভাবা। এবং
৮. হঠাৎ করে মানসিকতার পরিবর্তন। হঠাৎ ভাল লাগা, বেশি বেশি কথা বলা। অকারণে বেশি অস্থির লাগা এমন যদি হয় তবে বুঝতে হবে আপনি "বাইপোলার ডিসঅর্ডার" এ ভুগছেন যার জন্য যত শীঘ্র সম্ভব চিকিৎসা নেয়া অতি জরুরী।
এগুলোর মধ্যে যদি যেকোনো ৩ বা তার বেশি বৈশিষ্ট আপনার মধ্যে ২ সপ্তাহের বেশি অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি বিষণ্ণতায় ভুগছেন এবং আপনার সাহায্য দরকার।
শিশুর উপর মায়ের বিষণ্ণতার প্রভাবঃ
১. শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। বিষণ্ণতায় ভুক্তভোগী মা নিজের ঠিকমত যত্ন নিতে পারে না ফলে শিশুর বৃদ্ধিও বাঁধাগ্রস্থ হয়।
২. মা ও শিশুর মধ্যে যে স্বাভাবিক বন্ধন তা পরিপূর্ণরূপে বিকাশলাভ করতে ব্যর্থ হওয়া।
৩. এইসব শিশুরা সাধারণত জন্মের পরে অন্যান্য শিশুর চেয়ে কম প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ হয়। তারা অন্য স্বাভাবিক শিশুর মতো কথাবার্তা, নড়াচড়ায় দেরী করে এবং অনেক সময় অনেকে ব্যর্থ পর্যন্ত হয়।
৪. শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের একটি বড় অংশের জন্য দায়ি তাদের মায়েদের গর্ভকালীন বিষণ্ণতা।
৫. কাজেই এই ব্যাপারটি আপাতদৃষ্টিতে অনেক সাধারণ মনে হলেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে কাজেই সকলেরই উচিৎ এ বিষয়ে সচেতন হওয়া। মনে রাখবেন, বিষণ্ণ মা, বিষণ্ণ শিশু। সুস্থ মা, সুস্থ শিশু। সকলের সুস্থতা কামনা করছি। ধন্যবাদ।
আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য।
0 comments:
Post a Comment