Thursday, November 7, 2013

চুল পড়া / টাক পড়া (Baldness) এর কারন ও প্রতিকার

চুল পরা হালকা থেকে সম্পূর্ণ টাক অবধি হতে পারে। অনেক করাণে চুল পরতে পারে। 


বড় অসুখ থেকে সেরে ওঠার পরে চুন পরে যেতে পারে, সার্জারির পরে, মায়েদের সন্তান প্রসব করার পরে কখন কখন এটা হয়। অল্প স্বল্প চুলতো পরেই তবে টাক পরে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়।

তরুণ বয়সে হয়ে থাকলে সাধারণত এর উৎস মূলত পারিবারিক এবং এক্ষেত্রে চুল পরা শুরু হয় মাথার সামনের দিক থেকে এবং পরে মাথার পেছনের অংশেও হয়। যদিও পুরুষের ক্ষেত্রেই এর প্রাদুরভাব বেশি তবে মহিলারাও বৃদ্ধ বয়সে পারিবারিক কারনে টাক সমস্যায় ভূগতে পারেন।

ঔষধের প্রতিক্রিয়াঃ
ঔষধের কারণে হঠাৎ চুল পরে যেতে পারে এবং সারা মাথার চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অসুখ হওয়ার কারণেঃ
শারীরিক অসুস্থতার কারণে চুল পরতে পারে। যেমন থাইরয়েড হলে (হাইপোথাইরয়েডিসম বা হাইপারথাইরয়েডিসম), সেক্স হর্মনের ব্যালান্স নষ্ট হলে বা নিউট্রিশানের অভাবে আইরন, জিঙ্ক, বা/ও টিনের অভাবে। যারা খাবার খুব মেপে বা বেছে খায় বা যে সকল মহিলাদের খুব বেশি রজঃস্রাব হয়।

মাথায় ফাংগাল ইনফেকসান হলেঃ
মাথার কোন অংশে টাক পরে যেতে পারে ফাংগাল ইনফেকসান হলে এই কারণেই অনেক সময়ে বাচ্চাদের কোন কোন অংশে চুল পরে যায়।


এছাড়াও ধুলো ময়লা ও সূর্যের আলো, দুশ্চিন্তা ও অতি তাপমাত্রায় কাজ, এলোমেলোভাবে চুল আঁচড়ানো, চুলে অতিমাত্রায় প্রসাধনী এবং চুলের উপযোগী নয় এমন শ্যাম্পুর ব্যবহারে চুল পড়ে।

বংশগত টাক পরার ধাত ছেলেদের চুল পরার একটা ধরণ আছে (প্রথমে মাথার সামনে তার পর মাথার মাঝখান)এটা বেশির ভাগ পুরুষদের হয় এবং এটা অল্প বয়সেই শুরু হতে পারে। এটা তিনটি কারণে হতে পারে, বংশগত, হর্মনের জন্য বা বয়স বাড়ার ফলে। মহিলাদের চুল পরা সামনে থেকে না হয়ে মাথার মাঝখান থেকে শুরু হয়।

উপসর্গঃ
রোজ 50 থেকে 100 টা চুল পরা স্বাভাবিক এর থেকে বেশি পরলে চিন্তার বিষয়। পাতলা চুল হলে টাক দেখা যায় বেশি করে।

করণীয়ঃ
চুল পরা কিছু মাত্রায় কমানো যায় ঠিক ঠাক প্রয়োজনীয় খাবার খেলে, চুলে ব্যবহার করা তেল, সাবান ঠিক করে বাছলে এবং চুল পরা বন্ধ করে এমন ঔষধ খেয়ে। ফাংগাল ইনফেকসান হলে চুল পরিষ্কার রাখতে হবে কারোর সাথে চিরুনি, টুপি অদলবদল করা যাবে না। বংশগত চুল পরা চিকিত্সার মাধ্যমে সারানো যায়। 

কোন খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য একান্ত প্রয়োজনঃ
  • গাঢ় সবুজ সবজি ।এতে রয়েছে Vit-A, vit-C যা Natural Conditionar 'এর কাজ করে
  • গাঢ় সবুজ শাক ।এতে আছে Vit-E
  • বিভিন্ন ধরনের been যেমন-শিমের বিচী, মটর শুটি, বরবটি ইত্যাদি। এগুলো প্রোটিনের ভালো উৎস। আরও আছে iron,Zinc, Biotin । Biotin চুল ভেঙ্গে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
  • বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন- কাঠ বাদাম, কাজু বাদাম, আখরোট। এগুলো Natural Conditionar 'এর কাজ করে।( তবে দৈনিক ১ মুঠের বেশি নয়।)
  • চুল প্রোটিন দ্বারা তৈরী । তাই খাবার তালিকায় প্রথম শেনীর প্রোটিন রাখতে হবে, যেমন-মুরগী, ডিম।
  • লাল চাল,লাল আটা অর্থাৎ whole grain খেতে হবে।এতে Zinc, Iron, Vit-B পাওয়া যায়।
  • Low fat দুধ । এতে Calcium আছে, যা চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশকীয় উপাদান protein তো আছেই।
  • গাজর। Vit-Aএর ভাল উৎস। প্রতিদিন Snacks /salad হিসেবে খাবার তারিকায় রাখুন।
  • তিসি (Flax seed) চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। মোটা গুড়া করে ১ চাচমচ পরিমান প্রতিদিন খাওয়া উচিত।(এতে omega -3 fatty acid আছে।)
  • সূর্যমূখীর বীচি চুলকে মজবুত ও ঝলমলে করতে দারুন ভাবে কাজ করে।Dry roast করে ১মুঠ পরিমান খেতে পারেন। লক্ষ্য করুন: সূর্যমূখীর বীচি মশলার দোকান থেকে কিনবেন। গাছ/ফুলের চারার দোকান থেকে কিনবেন না, ওগুলোতে কীটনাশক দেয়া থাকে।
ঘরের পরিচর্যাঃ
ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস, এক চামচ নিম পাতার রস ও আদার রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। বিশ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অথবা
টক দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও এক চামচ নিম পাতার রস মিশিয়ে লাগান। ত্রিশ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। 

শীতে পরিচর্যাঃ
রাতে নারিকেল তেল অল্প গরম করে চুলের গোড়ায় ম্যাসেজ করুন। সকালে সামান্য লেবুর রস লাগিয়ে দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 


কী করবেনঃ
  • গোসলের পর চুল ভালো করে মুছে নিন। 
  • চুল উপযোগী শ্যাম্পু ও হেয়ার জেল ব্যবহার করুন। 
  • বেশি রোদে ক্যাপ ব্যবহার করুন। 
  • ভিটামিন ই-যুক্ত খাবার খান। 
  • চুল বেশি পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

কী করবেন নাঃ
  • বেশিক্ষণ চুল ভেজা রাখবেন না। 
  • প্রসাধনী এড়িয়ে চলুন। 
  • সেলুনে চুল কাটানোর সময় চিরুনি পরিষ্কার কি না দেখে নিন। 
  • দুশ্চিন্তা ও অতি তাপমাত্রা থেকে বিরত থাকুন।
সবশেষ কথা হল, সুস্থ্য চুলের জন্য দরকার Balance Diet . Crash diet, Very Low Calorie Diet, FAD Diet এর কারণে চুল পরে যায়, ভেঙ্গে যায়, রুক্ষ হয়ে যায়।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য।

0 comments:

Post a Comment