Sunday, November 17, 2013

হেঁচকি ওঠা বন্ধ করবেন কি ভাবে?

হেঁচকি উঠলে দাদী নানীরা নানা কারণ বললেও সমবয়সীরা তেড়ে এসে বলতো- নিশ্চয়ই চুরি করে কিছু খেয়েছিস্। 


হেঁচকি একটি অস্বস্তিকর সমস্যা। অনেক সময় হেঁচকি একবার শুরু হলে অনবরত চলতেই থাকে, বন্ধ হতে চায় না। তখন আপনার নিজের যেমন কষ্ট হয় আশে পাশের মানুষের জন্যও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই হেঁচকি। হেঁচকি থেকে সহজেই পরিত্রাণের কিছু উপায় আছে। 

আসুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে হেঁচকি ওঠা শুরু হলে তা বন্ধ করবেনঃ 

মিষ্টি খাবারঃ 
মিষ্টি খাবার নার্ভ ওভারলোডের কারণে অনেক সময় হেঁচকি শুরু হয়। এক্ষেত্রে দেখা গেছে যে মিষ্টি খাবার খেলে হেঁচকি ওঠা কমে যায়। হেঁচকি উঠলে এক চামচ চিনি মুখ নিয়ে রেখে দিন বেশ কিছুক্ষণ। একটু পরে দেখবেন হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে।

ঠান্ডা পানিঃ
এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি অল্প অল্প চুমুকে অনেক ঢোকে খেলে হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়। ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গড়গড়া করলেও হেঁচকির সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

জিভ বের করাঃ
শুনতে অদ্ভুত শোনালেও সত্যি যে হেঁচকির সমস্যায় জিভ বের করে রাখলে উপকার পাওয়া যায়। হেঁচকি ওঠা শুরু হলে আপনার জিভটিকে যতটুকু সম্ভব বাইরে বের করে রাখুন। অন্তত ১৫ সেকেন্ড বাইরে রাখার পর ও বন্ধ না হলে আরো কিছুক্ষণ রাখুন। হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয় যাবে আপনা আপনিই।

দম বন্ধ করে রাখাঃ
হেঁচকি উঠা শুরু করলে দম আটকে রাখলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। হাতের আঙ্গুল দিয়ে নাম চেপে ধরুন এবং মুখ বন্ধ করে রাখুন। এভাবে যতক্ষণ থাকা সম্ভব হয় ততক্ষণ থাকুন। হেঁচকি বন্ধ হয়ে গেলে দম ছেড়ে দিন।

কাগজের ব্যাগঃ
হেঁচকি উঠলে একটি কাগজের ব্যাগ অথবা পলিথিন ব্যাগে দম নিন ও দম ছাড়ুন। লক্ষ্য রাখবেন যেনও ব্যাগের ভেতর বাইরে থেকে বাতাস না ঢুকতে পারে। এই পদ্ধতিতে রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যায় এবং শরীর সেটাকে বের করে দেয়ার প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত হয়ে পরে। তখন ব্রেইন হেঁচকি ওঠার প্রক্রিয়ার কথা ভুলে যায় ও হেঁচকি বন্ধ হয়ে যায়।

অ্যান্টাসিডঃ
মিনারেল নার্ভের ইরিটেশন কমায় ও নার্ভকে শান্ত করে। তাই ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত অ্যান্টাসিডের একটি বা দুটি ট্যাবলেট খেলে হেঁচকি ওঠা কমে যায় অনেকেরই।

ধীরে খানঃ
যারা দ্রুত খায় তারা সাধাণরত খাবার ঠিক মতো চিবিয়ে খায় না। খাবার না চিবিয়ে দ্রুত খেলে খাবারের ফাঁকে বাতাস ঢুকে খাদ্যনালীতে আটকে যেতে পারে। এর ফলাফল হলো বিরক্তিকর হেঁচকি। তাই তাড়াহুড়া করে না খেয়ে ধীরে ধীরে চাবিয়ে খান। এতে হেঁচকি ওঠার প্রবণতা কমে যাবে অনেকটাই।

ঝাল খাবার এড়ানোঃ
গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত ঝাল খাবার খাওয়ার কারণে খাদ্যনালীতে ও পাকস্থলীতে জ্বালা-পোড়া হয়। এর ফলে হেঁচকি উঠার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই নিয়মিত হেঁচকি ওঠার সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত ঝাল খাবার এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ব্যায়ামঃ
হেঁচকি ওঠা বন্ধ করার একটি ব্যায়াম আছে। মেঝেতে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে পেটের ওপর নিয়ে আসতে হবে। এই অবস্থায় হাঁটু পেটের ওপর ২/৩ সেকেন্ড চেপে ধরে রাখতে হবে। এভাবে কয়েক বার করলে হেঁচকি বন্ধ হয়ে যাবে।

মদ্যপান ত্যাগঃ
মদ্যপান করলে খাদ্যনালী ও পাকস্থলীতে জ্বালা করে। অতিরিক্ত মদ্যপানে খাদ্যনালীর পর্দার ক্ষতি হতে পারে। অনেকে আবার অনেক দ্রুত ঢক ঢক করে মদ খেয়ে ফেলেন। অতিরিক্ত মদ্যপানে হেঁচকি ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই মদ্যপান এড়ালে হেঁচকি ওঠার সমস্যা কমানো সম্ভব কিছুটা হলেও।

হেঁচকি ওঠার সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পেতে এতো সব উপায় দেয়া হলো। কিন্তু এগুলো অনুসরণ করার পরেও যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হেঁচকি ওঠা বন্ধ না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

0 comments:

Post a Comment