Sunday, April 13, 2014

চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় কিছু টিপস!

চোখ আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। চোখের মূল্য যারা অন্ধ তারা খুব ভালো করেই বুঝতে পারেন। কিন্তু আমরা যারা বেশ ভালো ভাবে দেখতে পাই তারা বেশিভাগ সময়েই চোখের যত্ন নেই না। অবহেলা করি অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু এই কাজটি একেবারেই উচিৎ নয়। আমাদের চোখের যত্নে অনেক বেশি সচেতন হওয়া জরুরী।


চলুন তবে দেখে নেয়া যাক চোখের যত্নে জরুরী দৈনন্দিন কিছু টিপসঃ
✬  চোখকে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সব সময় সাথে রাখুন সানগ্লাস। বিশেষ করে এই মৌসুমে। যারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তারা অবশ্যই বাইরে বেরুলে সানগ্লাস পরবেন।
✬  যারা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তারা ঘরে এসেই প্রথমে লেন্স খুলে ফেলবেন। যতোটা কম পারা যায় কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করুন। চশমা ব্যবহারে আগ্রহী হোন।
✬  ৩ বেলা চোখে পানির ঝাপটা দেয়ার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে বাইরে থেকে ঘরে ফিরে চোখ ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন। এতে বাইরের ধুলো বালিতে মিশে থাকা রোগজীবাণু দূর হবে।
✬  প্রতিদিন অন্তত ১ বার চোখের ওপরে ঠাণ্ডা পানি ভেজানো কাপড় ১০-১৫ মিনিট দিয়ে রাখবেন। এতে চোখের কর্নিয়া সুস্থ থাকবে।
✬  সম্ভব হলে চোখে কাজল দেয়া থেকে বিরত থাকুন। গরম কালে কাজল গলে চোখের ভেতরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায় যা চোখের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
✬  মেয়েরা ঘরে ঢোকা মাত্র চোখের মেকআপ তুলে ফেলবেন। বেশি জোরে ঘষে চোখের মেকআপ তুলবেন না। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সাহায্য আলতো করে চোখের মেকআপ তুলুন।
✬  ঘুমানোর আগে চোখে ভালো কোনো ব্র্যান্ডের এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ক্রিম বা সেরাম অথবা জেল ব্যবহার করুন।
✬  চোখের যে কোনো সমস্যায় অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

যারা বেশি মানসিক পরিশ্রম করেন, অনিয়মের মধ্য দিয়ে দিন কাটান, অনিদ্রা কিংবা রক্ত স্বল্পতায় ভোগেন তারাই চোখের নিচে কালি বা চোখের চারধারে বলিরেখা এই সমস্যায় আক্রান্ত হন।

এই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতেঃ-
✬  আলু কিংবা শসার টুকরো চোখের ওপর দিয়ে ১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। ক্লান্তি কাটবে। চোখের তলায় কালি থাকলে দূর হবে।
✬  যখন তখন চোখে হাত দিবেন না ও অযথা চোখ ঘষবেন না। ময়লা থেকে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ঘষাঘষিতে চোখের নরম ত্বকে বলিরেখা পড়ে।
✬  তুলসি পাতাবাটা ও চন্দনবাটা গোলাপ পানি দিয়ে মিশিয়ে চোখে লাগান।
✬  ঠান্ডা টি-ব্যাগ চোখের পক্ষে আরামদায়ক।
✬  ভিটামিন এ এবং ডি যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। গাজর, বিট, পেঁপে, ইত্যাদি পুষ্টিকর শাক-সবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
✬  সাজগোজের সময় ভালো ব্র্যান্ডের মেকআপ ব্যবহার করা উচিত। এভাবে রূপচর্চা চালিয়ে গেলে গরমেও আপনার ত্বক থাকবে সুন্দর।

চোখের যত্নে দরকার পুষ্টিকর খাবার কোন ধরনের খাবার কেন প্রয়োজনঃ
✬  ভিটামিন-এ হলো চোখের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। ভিটামিন-এ চোখের বিভিন্ন অংশের আবরণকে রক্ষা করে। এর অভাবে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়। চোখের কালো রাজায় ঘা হয় এবং পরে চোখ নষ্ট হয়ে যায়।
✬  ভিটামিন-এর সঙ্গে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-ইর প্রয়োজনীয়তা আজ প্রমাণিত। এদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বলা হয়। এসব ভিটামিন বয়সজনিত চোখের দৃষ্টিক্ষয় অনেকাংশে রোধ করে।
✬  প্রোটিন বা আমিষজাতীয় খাদ্যের অভাবে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে চোখ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।
✬  গ্রামাঞ্চলে অনেক শিশুই ভিটামিন-এর অভাবজনিত অন্ধত্বে ভুগছে। এ ছাড়া ভিটামিন-এর অভাবে চোখের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ রেটিনা নষ্ট হয়ে যায় বলে প্রথমে রাতকানা ও পরে শিশু স্থায়ীভাবে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কী করবেন?
✬  ভিটামিন-এর অভাব জনিত চোখের রোগ শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। শিশুর জন্মের পর মায়ের দুধই তার জন্য সবচেয়ে ভালো খাবার। মায়ের দুধে প্রয়োজনীয় সব খাদ্য-উপাদান থাকে বলে ভিটামিন-এর অভাবজনিত অন্ধত্ব এসব শিশুর অনেক কম হয়।
✬  ছোটবেলা থেকেই শিশুকে সুষম খাদ্যে অভ্যস্ত করতে হবে।
✬  ছোট মাছ, পাকা ফল, শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। শিশুকে এসব খাবারে অভ্যস্ত হতে হবে।
✬  জ্বর ও পাতলা পায়খানা হলে প্রয়োজনীয় খাবার স্যালাইন ও সুষম খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন, যেন শরীরে ভিটামিন ও লবণের ঘাটতি না হয়।
✬  শিশু রাতে ঝাপসা দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
✬  চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন-এ সময় মতো খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা যায়। সবচেয়ে বড় কথা, ভিটামিন-এর অভাবজনিত অন্ধত্ব শুধু সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমেই প্রতিরোধ করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন প্রচার ও জনসচেতনতা।

                            [আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য।]

1 comment:

  1. লেখাটা খুব সুন্দর হয়েছে। তবে এরকম আরো একটি লেখা পড়েছিলাম এখানে>
    http://muktomoncho.com/archives/93

    ReplyDelete