Surprising Benefits of Exercise

Physical Exercise Is Going To Boost Your Cardiovascular Health.

Keeping Smile!

When someone is rude, keep a smile on your face. When you stay on the right road and keep your joy, you take away their power.

Yoga postures to relieve menstrual cramps

Many women suffer abdominal cramps during their menstrual cycles. At times, the cramps are combined with shooting or burning sensations in the lower abdomen. Nausea is also common during periods in females.

Health Benefits of Running

The health benefits of running include weight loss, a youthful appearance, prevention of muscle and bone loss, growth hormone enhancement, the prevention of stroke, diabetes, and hypertension. It also lowers high cholesterol level, improves blood clotting, boosts the immune system, reduces stress, and enhances mood.

Saturday, November 30, 2013

পেয়াজের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা!

পেঁয়াজ ছাড়া কি রান্না চলে? 
প্রতিদিনের রান্নায় পেঁয়াজ না থাকলে যেন স্বাদই পাওয়া যায় না। শুধু কি তাই? 
সালাদের সাথে, সিঙ্গারার সাথে কিংবা ভাতের সাথে কাঁচা পেয়াজও খেয়ে থাকেন অনেকে। 
কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই অতি পরিচিত পেঁয়াজের হরেক গুণের কথা? 
পেঁয়াজের আছে নানান গুণ এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক।


একটি বড় পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজে ভিটামিন এ, বি ও সি আছে।

আসুন জেনে নেয়া যাক পেঁয়াজের স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলোঃ   

উপকারী কোয়ারসেটিনের উৎকৃষ্ট উৎসঃ
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে কোয়ারসেটিন আছে যা পেয়াজের বাইরের হালকা বেগুনী ত্বকে থাকে। কোয়ারসেটিন রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়, রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে, হাঁপানির সমস্যা কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ব্রঙ্কাইটিস সমস্যার সমাধানে সহায়তা করে। মজার ব্যাপার হলো এই উপকার পেতে সারাদিন পেঁয়াজ না খেলেও চলবে। গবেষকদের মতে দিনে মাত্র একটি মাঝারী আকৃতির রান্না করা কিংবা কাঁচা পেঁয়াজ খেলেই এই উপকারিতা পাওয়া যায়।


শরীরকে বিষ মুক্ত করেঃ
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সালফার যৌগ আছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সালফারে এমিনো এসিড আছে যা রসুন ও ডিমে পাওয়া যায়। এই এমিনো এসিড গুলোকে মিথিওনাইন ও সিস্টাইন বলা হয়। এই উপাদান গুলো শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর ধাতুর থেকে মুক্তি দেয়। এমন কি এগুলো শরীর থেকে সীসা, আর্সেনিক ও ক্যাডমিয়াম বের করে দেয়। পেঁয়াজ ভিটামিন সি আছে যা শরীরকে বিশুদ্ধ করে এবং সীসা, আর্সেনিক ও ক্যাডমিয়াম থেকে শরীরকে রক্ষা করে।


হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারিঃ
পেঁয়াজ রক্তকে জমাট বাঁধতে দেয় না এবং রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। তাই পেঁয়াজ হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত উপকারী। অনেক কার্ডিওলোজিস্টই নিয়মিত পেঁয়াজ খেতে বলে দেন রোগীদেরকে। বিশেষ করে হার্ভাডের ডাক্তার ভিক্টর গুড়েউইচ তার রোগীদেরকে প্রতিদিন অন্তত একটি করে পেঁয়াজ খাওয়ার উপদেশ দেন।


ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে পেঁয়াজের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কোষের ডিএনএ কে ক্ষতির থেকে বাঁচিয়ে ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এমনকি গবেষণায় দেখা গেছে যে পেঁয়াজের রস টেস্ট টিউবের টিউমার সেল কে ধ্বংস করে এবং ইদুরের শরীরের টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে। পেঁয়াজের রস বিষাক্ত নয় এবং এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তাই যত খুশি তত খেলেও কোনো সমস্যা নেই।


যৌন ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
পেঁয়াজ যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। প্রতিদিন অন্তত এক গ্লাস করে পেঁয়াজের রস খেলে যৌন ক্ষমতা বাড়ে। এভাবে নিয়মিত খেলে যৌন ক্ষমতা প্রায় ২০০% বেড়ে যায়। যারা পেঁয়াজের রস খেতে পছন্দ করেন না তাঁরা খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খেলেও উপকার পাবেন।


এছাড়া ....
• পেয়াজের রস চুলে দিলে তা উকুন নাশক হিসেবে কাজ করবে পাশাপাশি চুল পরা কমাতেও সাহায্য করবে। 
• লাল পেঁয়াজ মাসিক রোগ সংশোধন করতে সাহায্য করে. মাসিক শুরু হবার কিছু দিন আগে লাল পেয়াজ খান।
• কারো নাক দিয়ে রক্ত পরলে কাচা পেয়াজ কেটে তার ঘ্রাণ নিতে দিন।
• প্রতিদিন একটা পেঁয়াজ আপনার ঘুমের অভাব দূর করবে।
• পোকামাকড় কামড়ালে সেখানে পেঁয়াজের রস লাগিয়ে দিন।
• সাদা পেয়াজ Piles থেকে রক্ত ঝরা বন্ধ করবার জন্যেও সুপারিশ করা হয়।
• পেয়াজ হজম শক্তি বাড়ায়।
• শরীর থেকে অবাঞ্ছিত কলেস্টেরল সরিয়ে সাহায্য করে।
• দৈনিক একটি লাল পেঁয়াজ করোনারি হার্ট রোগ থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারে।
• পেঁয়াজ শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
• জয়েন্ট পেইন দূর করে।
• হলুদের সাথে পেয়াজের রস মিশ্রিত করে শরীরে কোন কাল দাগ থাকলে সেখানে ব্যবহার করুন।
• দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
• আপনার শিশুর কৃমি সমস্যা থাকলে এক চামচ পেঁয়াজের রস খেতে দিন।
• পেয়াজ মেমরি ও স্নায়ুর উন্নতি ঘটায়।
• কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
• প্রতিদিন চিনি দিয়ে পেয়াজ খেলে তা শিশুদের উচ্চতা লাভ করতে সাহায্য করে।


আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Friday, November 29, 2013

উষ্ণ লেবু পানি পান করার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা!

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে অধিকাংশ মানুষই উষ্ণ পানীয় হিসাবে চা কিংবা কফি গ্রহণ করে। সকালে এক গ্লাস উষ্ণ লেবু পানি পান করলে সর্বাধিক মাত্রার উপকার পেতে পারে যে কেউ। শুধুমাত্র স্বাদ কিংবা ক্লান্তি দূর করার জন্য লেবু পানি পান করলে চলবে না পাশাপাশি অন্য যেসব কারণে লেবু পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ তা সম্পর্কে জানা যাক।



lemon     

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ 
লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রামক থেকে রক্ষা করে। আছে লৌহ এবং অ্যাসকরবিক এসিড যা অ্যাজমা জাতীয় সমস্যা কমায় এবং একইসাথে ঠাণ্ডাজ্বর জাতীয় রোগের বিরুদ্ধে ভীষণ কার্যকর।


শরীরের অম্ল – ক্ষারের মাত্রা ঠিক রাখেঃ 
যদিও লেবুতে অ্যাসকরবিক এবং সাইট্রিক এসিড বিদ্যমান তবুও লেবু হচ্ছে শরীরের অম্ল-ক্ষারের মাত্রা ঠিক রাখতে পারে এমন খাদ্যের মধ্যে অন্যতম। এইসব এসিড পরিপাক হওয়ার পরেই রক্তের অম্ল-ক্ষারের মাত্রা ঠিক রাখে।


হজমে সহায়কঃ 
লেবুতে থাকা সাইট্রাস ফ্ল্যাভোনলস হজমে সহায়কের টনিক হিসাবে কাজ করে। মনে করা হয়, যকৃত শুদ্ধ এবং উদ্দীপিত করতে – লেবুর রস হজমে সহায়ক হাইড্রোক্লোরিক এসিডকে সাহায্য করে এবং পাকস্থলীতে উপস্থিত খাদ্যসমূহকে হজম করে।


ত্বক পরিষ্কার রাখেঃ 
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‍্যাডিকেল ধ্বংস করে। ফ্রি র‍্যাডিকেল বয়স বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ত্বকের খসখসে ভাব এবং দাগ দূর করে লেবুতে থাকা বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ব্রণ বা অ্যাকনি সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া দূর আর ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট কার্যকরী।


রোগ সেরে উঠার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করেঃ 
লেবুতে থাকা অ্যাসকরবিক এসিড ভিটামিন সি হিসাবে পরিচিত যা ক্ষতস্থান সেরে তুলতে সাহায্য করে। একই সাথে শরীরের স্নায়ুসমূহ ভালো রাখতেও ভূমিকা পালন করে এইসব। ভিটামিন সি শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর উপাদান যা শরীরের প্রদাহ দূর করে এবং একইসাথে স্ট্রেস এবং যে কোনও ধরণের ব্যাথার উপশম করে।


হাইড্রেশন অর্থ্যাৎ শরীরে তরলের পরিমাণ ঠিক রাখেঃ 
সকালে বেলা এক গ্লাস উষ্ণ লেবু পানি শরীরের তরলের পরিমাণ ঠিক রাখে। একইসাথে সারাদিনের পরিপাক প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।


শরীরের শক্তি আনায়ন করেঃ 
লেবু রস ক্লান্তি দূর করে একইসাথে বিষণ্ণতা এবং অবসাদ দূরে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এমনকি লেবুর গন্ধ আমাদের স্নায়ুকে শান্ত করতে পারে।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Thursday, November 28, 2013

হৃদরোগ প্রতিরোধের কিছু উপায় !

হৃদরোগ চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল। এ ছাড়া হৃদরোগ একবার হলে প্রায় সারা জীবন এই মারাত্মক ব্যধি পুষতে হয়। তাই এইরোগ প্রতিরোধই উত্তম পন্থা।


আমরা ওষুধ ছাড়া ৫ ভাবে হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারিঃ 

১. ধূমপান না করা এবং তামাক জাতীয় পদার্থ যেমন- জর্দ্দা, গুল, তামাকপাতা ব্যবহার না করা। ধূমপান এবং তামাক জাতীয় জিনিষের ব্যাবহার হৃদরোগের ঝুঁকি অত্যন্ত বাড়িয়ে দেয়। সিগারেটে যে নিকোটিন থাকে তাতে আমাদের রক্তনালী শরু হয়ে যায়। ফলে রক্তনালী দিয়ে রক্ত চলাচলে বাধাগ্রস্থ হয়। যা হার্ট এ্যাটাকের অন্যতম কারণ। ধূমপান আমাদের উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. প্রতিদিন আমরা যাদি শারীরিক পরিশ্রম করি তাহলে আমাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। শারীরিক পরিশ্রম আমাদের ওজন কমায় এবং উচ্চ রক্তচাপের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই আমাদের প্রতিদিন শারীরিক প্ররিশ্রম করা উচিত যেমন-বাগান করা, ব্যায়াম করা, ঘরের কাজ করা ইত্যাদি।

৩. হার্ট এর জন্য উপযোগী খাবার খাওয়াঃ আমরা যদি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে তেল বা চর্বি এবং লবণ খাওয়া কমিয়ে দেই তাহলে আমরা হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারি। বেশী করে শাক-সবজি এবং ফল-মূল আহার করলে হার্ট অনেক সুস্থ এবং ভাল থাকতে পারে।

৪. শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রিণে রাখাঃ অল্প বয়সেই যদি আমাদের ওজন বেড়ে যায় তা আমাদের হার্টের অনেক পরিবর্তন ঘটায় যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেষ্টেরল, ডায়াবেটিস ইত্যাদি। তাই শারীরিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।

৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবেঃ উচ্চ রক্তচাপ এবং হাই কোলেষ্টেরল আমাদের হার্টের অনেক ক্ষতি করে। তাই রক্তচাপ ও কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। আর এ জন্য কোলেষ্টেরল লেভেল ও হার্টের অন্যান্য পরীক্ষা করা উচিত। 

৬. সঠিক রাখুন রক্তে চর্বির মাত্রাঃ প্রতি ১০০মিলিলিটার রক্তে মোট কলেস্টরলের মাত্রা থাকতে হবে ২০০ মিলিগ্রামের নিচে। পাশাপাশি এইচডিএল/কলেস্টরলের অনুপাত এবং এইচডিএল/ট্রাইগ্লিসারাইড অনুপাত ২% এর কম হলে তা হৃদবান্ধব হবে। কম চর্বিযুক্ত খাবার আর নিয়মিত ব্যায়াম –রক্তে চর্বির মাত্রা ঠিক রাখে।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Tuesday, November 26, 2013

লাল শাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়!

লাল শাক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ১১.৯৪ মিলিগ্রাম, ১.৬ গ্রাম খনিজ পদার্থ, শর্করা ৫.০ গ্রাম, আমিষ ৫.৩ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, ভিটামিন সি ৪৩ মিলিগ্রাম, 
ক্যালসিয়াম ৩৭৪ মিলিগ্রাম, খাদ্যশক্তি ৪৩ কিলোক্যালরি।


বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ছাড়াও এতে আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস এবং আঁশ-জাতীয় উপাদান বিদ্যমান।

উপকারিতাঃ 

-> লাল শাক ভিটামিন 'এ'-তে ভরপুর। লাল শাক নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে এবং অন্ধত্ব ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
-> শরীরে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমে গিয়ে যেসব অসুখ হয় তা প্রতিরোধ করা যায়।
-> এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
-> রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
-> লাল শাকের বিটা-ক্যারোটিন হার্টস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে।
-> এটি মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং দন্ত ও অস্থি গঠনে অবদান রাখে। দাঁতের মাড়ি ফোলা প্রতিরোধ করে।
-> শিশুদের অপুষ্টি দূর করে।
-> ক্যালরির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও লাল শাক যথেষ্ট উপকারি। এ ছাড়াও এটি শরীরের ওজন হ্রাস করে।
-> আঁশ জাতীয় অংশ খাবার পরিপাকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
-> ভিটামিন 'সি'-এর অভাবজনিত স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে।

 আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Monday, November 25, 2013

Piper Betle বা পান পাতা!

পান একটি গাছের নাম। যার পাতাকে পান হিসেবে ডাকা হয়। এটি চিবিয়ে খাওয়ার জন্য ব্যবহার হয়। সাধারণত বয়স্ক লোকেরা পান খেয়ে থাকে। শহরে, গ্রামে সর্বত্রই প্রচুর পান দোকান ও পান খাদক দেখা যায়। পান খাওয়ার প্রভাবে দাঁত লাল হয়ে যায়। অনেকে নেশার মত পান খায়। সেদিক বিচারে এটিও একটি নেশা জাতীয় দ্রব্য।



 দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পান একটি অতি পরিচিত খাবার। সাধারণত অতিথি আপ্যায়নে কিংবা কোন বৈঠকে আলোচনা শুরু করার উপলক্ষ্য হিসেবে পানের ব্যবহার দেখা যায়। যদিও পান গাছের পাতাকেই পান বলা হয়, পান বলতে মুলত পানের সাথে সুপারি, চুন ও নানান রকমের জর্দা (তামাক জাতীয় দ্রব্য), খয়ের ইত্যাদি একসাথে বোঝায়। পানের সাথে সবসময়ই সুপারি দেয়া হয়, তবে অনেকেই সুপারি ছাড়া পান খেতে পছন্দ করেন।

আন্তার্জাতিক ক্যান্সার গবেষণা এজেন্সী'র মতে সুপারি ও পান এক ধরনের কার্সিনোজেন (বিষ) যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সুপারি সহ পান খেলে মুখের ক্যন্সার হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সুপারি দিয়ে পান খেলে মুখের ক্যান্সারের ঝুকি ৯.৯ গুন (জর্দা সহ) এবং ৮.৪ গুন ( জর্দা ছাড়া)।

পান সাধারনত সুপারী ও চুন সহযোগে খাওয়া হয়। অনেকে পানের সাথে তামাক ও খেয়ে থাকে।
বৈজ্ঞানিক নামঃ Piper betle
গোত্রঃ Piperaceae

পান হল শরীরের জন্য খুব উপকারী৷ পানে প্রচুর মাত্রায় ক্লোরোফিল থাকে৷ এইজন্য পানের রস ওষুধের মত কাজ করে৷ পান বিভিন্ন রকমের হয়৷ মিঠা পাতি, মালবী, মাদ্রাসি, বেনারসী, কর্পুরী প্রভৃতি৷

পানের উপকারিতাঃ
* পান পাচন শক্তি বাড়ায়৷
* গলার সমস্যায় পান খুব উপকারী৷ আওয়াজ পরিস্কার করতে পান সাহায্য করে৷
* রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রন করতে পান সাহায্য করে৷
* পান খেলে মুখের স্বাদ ফিরে আসে৷
* হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রন করে পান৷
* পান খেলে পেট পরিস্কার হয়৷
* সর্দি কাশি হলে পানের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়৷
* পানের সঙ্গে গোলমরিচ, লবঙ্গ মিশিয়ে খেলে কাশি কমে যায়৷
* মুখে ঘা হলে পানের মধ্যে কর্পুর দিয়ে চিবিয়ে খেয়ে বার বার পিক ফেললে লাভ পাওয়া যায়৷
* পান খাওয়ার ফলে মুখে যে লালার সৃষ্টি হয় তা পাচন শক্তি বৃদ্ধি করে৷
* দাঁতের সম্প্যায়- দাঁতের মাড়ির দূষিত ক্ষতে পুঁজ জমতে থাকলে পানের রসের সাথে অল্প পানি মিশিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের গোড়ায় পুঁজ জমে না।
* কানের পুঁজ-কানের পুঁজ পানের রস গরম করে দুই-এক ফোঁটা করে কানে দিলে কানের পুঁজ কমে যায়।
* খুশকি দূর করতে পান পাতা বেটে মাথায় মাখলে খুশকি দূর হয়।
* মুখের দুর্গন্ধে পান পাতা মুখের দুর্গন্ধ দূর করে।
* মাথাব্যথায় পান পাতার রস দুই-তিন ফোঁটা করে নাকে দিলে মাথাব্যথা দূর হয়।
* শিশুর শ্বাসকষ্ট- পান পাতার রস একটু গরম করে সরিষার তেলের সাথে মিশিয়ে বুকে মালিশ করলে শিশুর কফ ও শ্বাসকষ্ট দূর হয়।

এ ছাড়া পান পাতা কাম ও স্নায়ু উদ্দীপক, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, বাতব্যথা দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর।

তবে ...
* পানের সঙ্গে জর্দা মিশিয়ে খেলে পানের সন গুন নষ্ট হয়ে যায়৷
* সব সময় খাওয়ার পরে পান খাওয়া উচিত৷ খালি পেটে পান খাওয়া উচিত নয়৷
* তবে বেশী পান খেলে মুখ এবং চোখের রোগ হতে পারে৷
* পানের সঙ্গে বেশী সুপারী খাবেন না৷
* পানের সঙ্গে বেশী খয়ের খেলে ফুসফুসে ইনফেকশান হয়৷
* পানে বেশীমাত্রায় চুন খেলে দাঁতের ক্ষতি হয়৷
* যাদের জ্বর এবং দাঁতের সমস্যায় ভোগেন তাদের পান খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত৷
* পান উষ্ণ এবং পিত্তকারক৷ শিশুরা এবং অন্তঃস্বত্ত্ব মহিলাদের পান খাওয়া উচিত নয়৷

পানঃ ইহা রুচিকারক, রক্ত পিত্তজনক, বলকারক, কামভাব বর্ধক, ঘা বর্ধক, কফ নাশক, রাতকানা নাশক, বায়ু নিবারক, মুখ দূর্গন্ধ নাশক।
ছাঁচি পানঃ সুপথ্য, রুচি বর্ধক, অগ্নিদীপক, পাচক ও কফ বাত নাশক
সুপারীঃ কফ দুর করে, পিত্তের দোষ নষ্ট করে, মদকারক, অগ্নিবর্ধক, রুচিকারক, মুখের নিরসতা নাশক। কাঁচা সুপারী দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে, পেটের অগ্নি নষ্ট করে, ত্রিদোষ নাশ করে।
জর্দা বা তামাকঃ সাদা জর্দা বা তামাক পাতা কোন গুন পাওয়া যায় নাই।
চুনাঃ( যে চুন পানের সহিত খাওয়া হয়) মনে রাখিতে হইবে যে, পাথর চুনা শরীরের ক্যালসিয়াম অর্থাৎ শক্তিক্ষয় করে, জীবনী শক্তি নষ্ট করে, পাকস্থলীর শক্তি নাশ করে, এইজন্য কোন মতেই পাথর চুনা খাওয়া উচিত নহে।
ঝিনুক চুনা ও শামুক চুনাঃ শরীরের প্রভূত উপকার সাধন করিয়া থাকে। ঝিনুক চুনের গুন - এই চুন বাত, শ্লেষা, মেদো রোগ, অম্ল পিত্ত শূল, গ্রহনী, ব্রণ ও ক্রিমি রোগ নষ্ট করে। ৮ তোলা চুন দশ সের পানির মধ্যে দুই প্রহর ভিজিইয়া রাখিলে, সেই পানির সহিত দুধ মিশ্রিত করিলে মধু মেহ রোগ প্রশমিত হয়। ইহা অম্ল পিত্ত ও শূল রোগের পথ্য ও ঔষধ। ঝিনুক চুনের মধ্যে মুক্তার গুন পাওয়া যায়।

সতর্কতাঃ অনেকে পান পাতার সাথে জর্দা খেয়ে থাকেন, জর্দার কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে। তাই পান চিবানোর সময় জর্দা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং সবাই সুস্থ থাকুন।


আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য।

Sunday, November 24, 2013

ওজন নিয়ন্ত্রণ খুব একটা কঠিন কাজ নয়!

সারা বিশ্বে এখন স্লিম ফিগারের জয়জয়কার। মেদবিহীন ছিপছিপে আকর্ষণীয় দেহের গড়ন সবার প্রিয়। এই প্রত্যাশা পূরণ খুব একটা কঠিন কাজ নয়। পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে স্বাভাবিক ওজন আর সুস্থ শরীরের অধিকারী হওয়া সহজেই সম্ভব। সবার মুখেই এক কথা কীভাবে যে দেহের ওজন কমবে বুঝতে পারছি না বা এত চেষ্টা করেও ওজন কমাতে পারছি না। 


আসুন না দেখি একটু সচেতন হয়ে, তিনটি কৌশলের মাধ্যমে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ওজনের সাফল্যে পৌঁছাতে পারি কি না?
১. খাদ্য
২. ব্যায়াম ও
৩. ওজন নিরীক্ষণ ও রেকর্ডের মাধ্যমে

ওজনাধিক্য কী?
শরীরের ওজন স্বাভাবিক মাত্রা থেকে বেড়ে যাওয়াকে ওজনাধিক্য বলে। ওজনাধিক্য বা স্থূলতা তখনই বলা হবে যখন শরীরে চর্বির পমিরাণ বেড়ে যাবে। মানুষের শরীরে স্বাভাবিক অবস্থায় সঞ্চিত চর্বি (মোট ওজনের শতকরা প্রায় ১৪ ভাগ) থাকে। সব ক্ষেত্রে দেহের ওজন বেশি হলেই স্থূলতা বলা যায় না। যেমন একজন খেলোয়াড়ের দেহের ওজন বেশি থাকতে পারে তার শরীরে সুশৃঙ্খলভাবে বর্ধিত মাংসপেশির জন্য, যা হয়তো ওজন নির্ধারণের ফর্মুলায় ফেললে ওজনাধিক্যের মধ্যে হতে পারে। যাকে কখনোই স্থূলতা বলা যাবে না। সে জন্য দেহের জমাট বাঁধা চর্বির পরিমাপের মাধ্যমে ওজনাধিক্য বা স্থূলতা নির্ণয় করা শ্রেয়।

ওজনাধিক্য হয় কীভাবে?
ওজনাধিক্য হওয়ার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে শরীরের প্রয়োজন থেকে বেশি খাবার খাওয়া অর্থাৎ বেশি ক্যালরির খাবার খাওয়া। শরীরের প্রয়োজন মেটানোর পর বাড়তি খাবারগুলো চর্বি হয়ে দেহকোষে জমা হয়। কিছু চর্বি শরীরে জমা থাকা দরকার প্রয়োজনে শক্তি সরবরাহ করার জন্য। কিন্তু চর্বি বেশি জমা হলেই ওজনাধিক্য তৈরি হবে।

ওজনাধিক্যের সঙ্গে খাদ্যের সম্পর্ক:
ওজনাধিক্যের সঙ্গে খাদ্যের সরাসরি সম্পর্ক। অন্য কোনো কারণ যদি থাকেও তবুও ওজন বেড়ে যায় এ জন্যই যে, খাবার যদি বেশি খাওয়া হয় যা দরকার তার থেকে-শরীরের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য সুষম খাবার খাওয়া প্রয়োজন এটা যেমন সত্য আবার অন্যদিকে প্রয়োজন থেকে বেশি খাবার ক্রমাগতভাবে খাওয়া হলে ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে থাকবে বলে ওজনাধিক্য সৃষ্টি হবে এটাও সত্য।

প্রয়োজন থেকে বেশি খেলে কীভাবে ওজন বাড়ে?
প্রতিদিন যদি ১০০ ক্যালরি খাবার বেশি খাওয়া হয় আর যদি তা খরচ না হয় তবে মাসের শেষে ৩০০০ ক্যালরি বেশি খাওয়া হবে যা খরচ না হয়ে যদি শরীরে সঞ্চিত চর্বি হয়ে জমা থাকে তবে এর ফলে মাসে ০.৪ কেজি ওজন বাড়তে পারে। (১ কেজি সঞ্চিত চর্বিতে ৭০০০ ক্যালরি থাকে) এভাবে প্রতিদিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ না হওয়া মাত্র ১০০ ক্যালরির খাবার সারা বছর ধরে যদি খাওয়া হয় তবে বছরের শেষে শরীরের ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত বাড়বে।

১০০ ক্যালরি কীভাবে পাওয়া যায়?
একটি আটার রুটি বা একটি লুচি বা আধা পরোটা বা একটি মাঝারি মাপের কলা বা দুই টুকরা মাছ/মাংস বা দুই চা চামচ মাখন/ মেয়োনেজ বা ১০ পিস পটেটো চিপস বা আধা বোতল কোমল পানীয়।

হেঁটে কতটুকু ক্যালরি কমানো যায়?
লক্ষণীয় যে ১০০ ক্যালরি আছে এ রকম খাবার খাওয়ার সময় পরিমাণ বেশি হচ্ছে বলে মনে হবে না, কিন্তু সেগুলো কায়িক শ্রমের মাধ্যমে খরচ করা না হলে ধীরে ধীরে ওজন বেড়ে যেতে থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ৬০ কেজি ওজনের একজন ব্যক্তি যদি স্বাভাবিক গতিতে ১০ মিনিট হাঁটেন, তবে প্রায় ৪৭ ক্যালরি খরচ হবে অর্থাৎ ১০০ ক্যালরি খরচ করতে হলে ওই ব্যক্তিকে প্রায় ২০ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হাঁটতে হবে।

খাবারের ক্যালরি কমানোর উপায়:
= ডিমঃ ভাজি বা ওমলেট না খেয়ে সিদ্ধ বা পানি পোচ করে খাওয়া।
= দুধঃ ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করে ওপরের সর তুলে ফেলে দিয়ে খাওয়া বা ফ্যাটবিহীন দুধ খাওয়া।
= মাছঃ তেলে ভাজি না খেয়ে সামান্য তেলে রান্না করে খাওয়া। মাংস কাটার সময় লেগে থাকা চর্বি খুঁটিয়ে বাদ দেয়া, মাংস রান্না করার পর ভেসে থাকা তেল ওপর থেকে তুলে ফেলে দেয়া।
= ডালঃ পিঁয়াজু বা ভুনা না খেয়ে সিদ্ধ করে খাওয়া।
= চালঃ পোলাও বা ফ্রাইড রাইস না খেয়ে ভাত খাওয়া।
= আটাঃ পরোটা, লুচি, পুরি ইত্যাদি না খেয়ে রুটি, পাউরুটি অথবা তন্দুর খাওয়া। রুটিতে মাখন বা মার্জারিন বা মেয়োনেজ ব্যবহার না করা।
= শাক-সবজিঃ ভাজি না খেয়ে অল্প তেলে রান্না করে খাওয়া, সিদ্ধ বা স্যুপ বানিয়ে খাওয়া।
= সালাদঃ সালাদ ড্রেসিং (মেয়োনেজ, সালাদ ওয়েল ইত্যাদি) না মিশিয়ে মসলার গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া।
= ফলঃ কাস্টার্ড বা জুস না খেয়ে টাটকা ফল খাওয়া।
= খাবার রান্নার সময় কম মসলা ব্যবহার করা (মসলা বেশি ব্যবহার করলে তেল বেশি ব্যবহার করা হয়ে যায়), রান্নায় তেল, ঘি, ডালডা ইত্যাদি কম দেয়া।
= খাবারে নারকেল, বাদাম, দই, ক্রিম ইত্যাদির ব্যবহার বাদ দেয়া।
= ফাস্টফুড জাতীয় খাবার বাদ দেয়া।
= চিনি ও চিনি দিয়ে বানানো খাবার বাদ দেয়া।

ওজন কমানোর জন্য করণীয়:
ওজন কমানোর জন্য হয় কম ক্যালরির খাবার খেতে হবে নয়তো কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে (বা ব্যায়াম) ক্যালরি খরচ করে ফেলতে হবে, বরং দুটোই একসঙ্গে করা আরো ভালো। শুধু কায়িক পরিশ্রম কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ওজন কমায় না, কার্যকর হয় তখনই যখন সঙ্গে যুক্ত হয় কম ক্যালরির খাবার খাওয়া।

মানিয়ে চলার কয়েকটি কৌশল:
= ধৈর্য ধরে দৃঢ়তার সঙ্গে অন্য অনেক কাজের মতো খাওয়াকে কাজ হিসেবে নেয়া।
= কোনো বেলায় খাবার বাদ দেয়া ঠিক নয়, এতে বেশি ক্ষুধা তৈরি হবে, পরবর্তী সময়ে বেশি খেতে ইচ্ছা করবে এবং অল্প দিনের মধ্যে খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা কমে যাবে।
= খাবার পরিমাণে ঠিক রেখে সুষম খাবার খাওয়াঃ ক্যালরিবহুল খাবার খাওয়া কমানো এবং কম ক্যালরির খাবার খাওয়া বাড়ানো।
= ধীরে ধীরে ভালো করে খাবার চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করাঃ এতে করে অল্পতে পেট ভরে গেছে বলে মনে হবে এবং বারেবারে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাবে।
= ঝোঁকের বশে খাবার খাওয়া বাদ দেয়া যেমনঃ মার্কেটে বা বাইরে গেলে খাওয়ার ইচ্ছা সম্বরণ করতে হবে। ফাস্টফুড বা আইসক্রিম জাতীয় ক্যালরিবহুল খাবার বাদ দিতে হবে।

সর্বোপরি দৈহিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম অব্যাহত রাখা। বাঞ্ছিত ওজনে ফিরে না আসা পর্যন্ত চেষ্টা অব্যাহত রাখা এবং বাঞ্ছিত ওজন ধরে রাখার চেষ্টা করে যাওয়া। ওজন যেমন একদিনে বাড়ে না তেমনি ওজন কমানোও একদিনে সম্ভব নয়। তাই ধীরে ধীরে চেষ্টার মাধ্যমে ওজন কমানো সম্ভব। আজকের পরামর্শগুলো ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Saturday, November 23, 2013

যদি লম্বা হতে চান!

লম্বা হতে চাই ...! লম্বা হতে চাই ...! ছেলে বা মেয়ে সবার মনের বাসনা একই। যারা বেশ ভালই লম্বা তাদেরও মনে হয় আরও ১-২ ইঞ্চি লম্বা হতে পারলে বেশ ভাল মানাত!


আসলে আপনি কতটুকু লম্বা হবেন তা আপনার বংশগতি থেকেই নির্ধারিত হয়। তবে একথাও ঠিক আপনার পূর্বপুরুষেরা লম্বা হলেও আপনি যদি অপুষ্টিতে ভোগেন তবে আপনার বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না। আর মানুষের দেহের বৃদ্ধি ঘটে ২৫ বছর বয়স পর্যন্তই। তাই কিশোরকাল থেকেই এ ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

তিনটি জিনিসের সমন্বয় লম্বা হতে সাহায্য করবেঃ-
১.পুষ্টিকর খাবার
২.নিয়মিত ব্যয়াম
৩.পর্যাপ্ত বিশ্রাম

কি কি থাকতে হবে খাবার তালিকায়ঃ


মিনারেলসঃ
পর্যাপ্ত পরিমান বিভিন্ন রকমের মিনারেল আমাদের খাবার তালিকায় রাখতে হবে। আমাদের দেহে প্রতিটি কাজে মিনারেলের ভূমিকা রয়েছে। হাড়ের গঠন ও বৃদ্ধিতে মিনারেল একান্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। বিষেশ ভাবে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস যেন পরিমান মত গ্রহন করা হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে। দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ছোট মাছ, খেজুর, বাধাকপি,ফুলকপি, ব্রোকলি, পালং শাক, পুই শাক ইত্যাদিতে ভাল পরিমান ক্যালসিয়াসম আছে। দুগ্ধজাত খাবার, মাছ, মাংস, এমনকি সবজিতেও ফসফরাস আছে। আয়রন পাওয়া যায় খেজুর, ডিমের কুসম, কলিজা, গরুর মাংসে। ম্যাগনেসিয়াম আছে আপেল, জাম্বুরা, ডুমুর, লেবু ইত্যাদিতে। জিংক পাওয়া যায় ডিম, সূর্যমূখীর বীচিতে।


ভিটামিনঃ
আমাদের প্রয়োজনীয় সব রকমের ভিটামিনই বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফল থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু খাবারের ভিটামিন দেহে কতটুকু গৃহিত হচ্ছে তা বোঝা বেশ কঠিন। তাই বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। Vitamin B-1 আছে চীনা বাদাম, লাল চাল, গমে। Vitamin B-2 আছে মাছ, ডিম, দুধে। Vitamin B-6 রয়েছে বাধাকপি, কলিজা, গরুর মাংসে। Vitamin D পাওয়া যায় মাছের তেল, দুগ্ধজাত খবার থেকে। Vitamin E আছে ডিম, সয়াবিন, গমে। Vitamin A আছে ডিমের কুসুম, গাজর, দুধ, কলিজায়।


প্রোটিনঃ
হাড়ের বৃদ্ধির সাথে সাথে মাংস পেশীরও বৃদ্ধি পেতে হবে লম্বা হওয়ার জন্য। আর মাংস পেশির বৃদ্ধি ও মজবুত হওয়ার জন্য প্রয়োজন প্রোটিন। খাবার তালিকায় ভাল মানের প্রোটিন যেমনঃ- মাছ, মাংস, ডিম রাখুন। বিভিন্ন রকমের ডাল, মটরশুটি, সীমের বীচি, কাঠালের বীচি ইত্যাদি থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায়। খাবার তালিকায় সয়া প্রোটিন, বিভিন্ন রকমের প্রোটিন সেইক যোগ করতে পারেন।


কার্বোহাইড্রেটঃ
অনেকেই লম্বা হওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশী পরিমানে গ্রহনকরে থাকেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, বেশী পরিমান কার্বোহাইড্রেট লম্বা হওয়াকে বাধাগ্রস্থ করে। কারণ বেশী পরিমান কার্বোহাইড্রেট গ্রহন মানে রক্তে বেশী পরিমান গ্লুকোজ। এর ফলে ইনসুলিন নামক হরমোনও নিঃসৃত হবে বেশী। এবং ইনসুলিন দেহের গ্রোথ হরমনের কার্যকারীতা কমিয়ে দেয়। তাই খাবার তালিকায় লাল আটা, লাল চাল, ওট ইত্যাদি রাখুন ময়দা, সাদা আটা, পলিশ চালের পরিবর্তে।


পানিঃ
পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবে , প্রায় ১.৫ থেকে ২ লিটার দৈনিক। 

যেসব কারণে লম্বা হওয়া বাধা পায়ঃ
 ঘুমের অভাবঃ- দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমের অভ্যাস তৈরী করুন। এটি সবচেয়ে সহজ এবং অনেক কার্যকরী উপায়। সঠিক এবং সুন্দর ভাবে ঘোমানো আপনার দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি মাত্রা আরো বাড়িয়ে তোলে।
 খেলা-ধূলা না করাঃ- বাস্কেট বল ভলি বল খেলার অভ্যাস গড়ে তুলুন ও কিছু stretching exercises ও করতে হবে। যারা নতুন শুরু করছেন তারা প্রথমে অল্প কিছু stretch ups, এর পর দড়ি লাফ, এর পর অন্যান্য ব্যায়াম শুরু করুন।
অপুষ্টিঃ- পুষ্টিকর ও সুষম খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
Posture ঠিক না থাকাঃএ ক্ষেত্রে ডাক্তারের সাহায্য নিতে হবে।

যা ত্যাগ করতে হবেঃ
ড্রাগ এবং এলকোহল এই দুইটিই আপনার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনেক বড় বাঁধা। ধূমপান যেমনি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তেমনি দেহের হরমোন গঠনও কমিয়ে ফেলে। ( জানি এ বেপারটা আপনাদের অনেকেরই ভাল লাগেনি। তবুও এটি সত্য)


আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Friday, November 22, 2013

আধকপালি বা মাইগ্রেন হলে করণীয়!

মাথাব্যথার প্রকৃত কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা আজও কোনও স্থির সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি। টেনশনসহ নানা কারণেই মাথাব্যথা হতে পারে। এসব মাথা ব্যথাকে আমরা আধকপালি বা মাইগ্রেন বলি। এ নিস্তারের উপায় কি? সে বিষয়েই আজকের আলোচনা।


বিজ্ঞানীরা ১৯৬০ সালে মাথাধরা সম্পর্কিত এক গবেষণায় জানান, টেনশনের কারণে অনেক সময় মাথাব্যথা হয় এবং তার চিকিৎসাও সহজ। রক্তবাহী শিরাগুলো যখন মস্তিষ্কে ঠিকমতো রক্ত সরবরাহ করে না, তখন অনেকে একে মাইগ্রেনের ব্যথা হিসেবে চিহ্নিত করেন।

মাইগ্রেন হল একটি ভিন্ন ধরনের মাথা ব্যথা। মেয়েদের মাঝে এ রোগ বেশী দেখা যায়। তবে পুরুষেরও এ রোগ হতে পারে।

এই রোগ কেন হয়?
মাথার ভেতরের রক্তচলাচলের তারতম্যের কারণে এই রোগ হয়। রক্ত চলাচল কমে গেলে হঠাত্ করে চোখে সব অন্ধকার দেখা যায়, এবং পরবর্তীতে রক্ত চলাচল হঠাত্ বেড়ে গিয়ে প্রচন্ড মাথা ব্যথার অনুভূতি তৈরী হয়।

এছাড়াও ...

প্রথমতঃ কিছু কিছু খাবার যেমনঃ চকলেট, পনির, কফি ইত্যাদি খাবার, জন্ম বিরতীকরণ ওষুধ, দুঃচিন্তা, অতিরিক্ত ভ্রমণ, ব্যায়াম ইত্যাদির কারণে এই রোগের সূচনা হতে পারে।

দ্বিতীয়তঃ মাইগ্রেন রোগী যারা এ ব্যথার পাশাপাশি সাইনাসগুলোর প্রদাহে ভুগছেন বা প্রচণ্ড সর্দি-কাশি বা ঠাণ্ডায় ভুগছেন; তাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।

তৃতীয়তঃ যখন প্রচণ্ড গরম পড়ে এবং পরিবেশের অবস্থা ভ্যাপসা আকার ধারণ করে তখন মাইগ্রেনের রোগীর মাথাব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে শীতকালে যদি ঠাণ্ডা বাতাস বেশি লাগে বা কুয়াশা পরিবেষ্টিত অবস্থা বিরাজ করে তখন এর প্রকোপ আরও বেড়ে যায়।

কমন মাইগ্রেনঃ
মাথা ব্যথা, বমি ভাব এই রোগের প্রধান লক্ষণ। তবে, অতিরিক্ত হাই-তোলা, কোন কাজে মনোযোগ নষ্ট হওয়া, বিরক্তবোধ করা ইত্যাদি উপসর্গ মাথা ব্যথা শুরুর আগেও হতে পারে। মাথার যে কোন অংশ থেকে এই ব্যথা শুরু হয়। পরবর্তীতে পুরো মাথায় ছড়িয়ে পড়ে। চোখের পেছনে ব্যথার অনূভূতি তৈরী হতে পারে। চোখের উপর হালকা চাপ দিলে আরাম বোধ হয়। মাথার ২ পাশে কানের উপরে চাপ দিলে এবং মাথার চুল টানলে ভাল লাগে। তখন শব্দ এবং আলো ভাল লাগেনা। কখনো কখনো অতিরিক্ত শব্দ এবং আলোতে মাথা ব্যথা বেড়ে যায়।

ক্লাসিকাল মাইগ্রেনঃ
এখানে চোখে দৃষ্টি সমস্যা যেমন চোখে উজ্জ্বল আলোর অনুভূতি, হঠাত্ অন্ধকার হয়ে যাওয়া, দৃষ্টি সীমানা সরু হয়ে আসা অথবা যে কোন এক পাশ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ হতে পারে। ২০ মিনিট স্থায়ী এই উপসর্গের পর বমির ভাব এবং মাথা ব্যথা শুরু হয় যা সাধারণত এক পাশে হয়। দৃষ্টির সমস্যা ১ ঘন্টার বেশী স্থায়ী হলে ধরে নিতে হবে এটি মাইগ্রেন নয়। ব্রেইন অথবা চোখে অন্য কোন সমস্যার কারণে দৃষ্টির এ সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। মাথা ব্যথা বিহীন শুধুমাত্র ভিসুয়াল অরা বা দৃষ্টি সমস্যাও ক্লাসিকাল মাইগ্রেন এর লক্ষণ হতে পারে।

করণীয়ঃ
যাদের এ রোগ আছে, তাদের অন্তত: দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুম আবশ্যক। সে সব খাবার খেলে মাইগ্রেন শুরু হতে পারে সে সব খাবার যেমন কফি, চকলেট, পনির, আইসক্রীম, মদ ইত্যাদি বর্জন করা উচিত। অধিক সময় উপবাস থাকা যাবে না। জন্মবিরতীকরন পিল সেবন না করা শ্রেয়। প্রয়োজনে অন্য পদ্ধতি বেছে নেয়া ভাল। পরিশ্রম, মানষিক চাপ এবং দীর্ঘ ভ্রমণ বর্জনের মাধ্যমে মাইগ্রেনের আক্রমণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

চিকিত্সাঃ
এই ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খুব কার্যকর।

সবচেয়ে বড় কথা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং মানষিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এর মাধমে অনেক ক্ষেত্রেই এই রোগের বার বার আক্রমণ হতে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন, সব মাথা ব্যথা মাইগ্রেন নয়, দৃষ্টি স্বল্পতা, ব্রেইনটিউমার, মাথায় রক্তক্ষরণ ইত্যাদি কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে, সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন।

 আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Thursday, November 21, 2013

কালোজিরার গুনাগুণ ও ব্যবহার!

প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রায় ১৪শ’ বছর আগে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছিলেন, ‘কালোজিরা রোগ নিরাময়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তোমরা কালোজিরা ব্যবহার কর, নিশ্চয়ই সাম ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় ক্ষমতা এর মধ্যে নিহিত রয়েছে।’ আর সাম হলো মৃত্যু। সে জন্য যুগ যুগ ধরে পয়গম্বরীয় ওষুধ হিসেবে সুনাম অর্জন করে আসছে।



তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনা তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘ক্যানন অব মেডিসিন’-এ বলেছেন, ‘কালোজিরা দেহের প্রাণশক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।’ কালোজিরা তে প্রায় শতাধিক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এর প্রধান উপাদানের মধ্যে প্রোটিন ২১ শতাংশ, শর্করা ৩৮ শতাংশ, স্নেহ ৩৫ শতাংশ। এ ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। 

প্রতি গ্রাম কালজিরায় যেসব পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা নিন্মরূপ­-
* প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম,
* ভিটামিন-বি ১.১৫ মাইক্রোগ্রাম
* নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম
* ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম
* আয়রণ ১০৫ মাইক্রোগ্রাম
* ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম
* কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম
* জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম
* ফোলাসিন ৬১০ আইউ

কালোজিরায় কি আছেঃ
এতে রয়েছে ক্যন্সার প্রতিরোধক কেরোটিন ও শক্তিশালী হর্মোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্লরোগের প্রতিষেধক।

কালোজিরার ব্যবহারঃ

১/ মাথাব্যথাঃ মাথা ব্যথায় কপালে উভয় চিবুকে ও কানের পার্শ্ববর্তি স্থানে দৈনিক ৩/৪ বার কালোজিরা তেল মালিশ করূন

২/ চুলপড়াঃ লেবু দিয়ে সমস্ত মাথার খুলি ভালোভাবে ঘষুণ১৫ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও ভালোভাবে মাথা মুছে ফেলুনতারপর মাথার চুল ভালোভাবে শুকানোর পর সম্পুর্ন মাথার খুলিতে কালোজিরা তেল মালিশ করুন১ সপ্তাতেই চুলপড়া বন্ধ হবে

৩/ কিডনির পাথর ও ব্লাডারঃ ২৫০ গ্রাম কালো জিরা ও সমপরিমান বিশুদ্ধ মধুকালোজিরা উত্তমরূপে গুড়ে করে মধুর সাথে মিশ্রিত করে দুই চামচ মিশ্রন আধাকাপ গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন আধা চা কাপ পরিমাণ তেলসহ পান করতে হবে

৩/ যৌন-দুর্বলতাঃ কালোজিরা চুর্ণ ও যয়তুনের তেল (অলিভ অয়েল), ৫০ গ্রাম হেলেঞ্চার রস ও ২০০ গ্রাম খাটি মধু = একত্রে মিশিয়ে সকাল খাবারের পর ১চামচ করে সেব্য

৪/ চেহারার কমনীয়তা ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিঃ অলিভ অয়েল ও কালোজিরা তেল মিশিয়ে অঙ্গে মেখে ১ ঘন্টা পর সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলন

৫/ ডায়াবেটিসঃ প্রতিদিন সকালে এক চিমটি কালজিরা এক গ্লাস পানির সাথে খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

৬/ প্রসূতি মাতাদের দুগ্ধ বাড়াতে ও নারী দেহের মাসিক নিয়মিতকরণে এবং মাসিকের ব্যথা নিবারণে কালোজিরার ভূমিকা রয়েছে।

৭/নিয়মিত অল্প পরিমাণ কালোজিরা খেলে মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রক্ত সঞ্চালন ও বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় এবং সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে।

সুতরাং কালো জিরা হোক আমাদের নিত্য সঙ্গী সু-স্বাস্থ্য অর্জনে ও সংরক্ষনে কালোজিরা জাত ওষুধ গ্রহনে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা জটিলতা সৃষ্টি করে না

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্যধন্যবাদ

Wednesday, November 20, 2013

Chicken Pox বা জল বসন্ত!

আমাদের দেশে চিকেন পক্সের খুব বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। জলবসন্ত বা চিকেন পক্স একটি খুবই ছোঁয়াচে রোগ, ভেরিসেলা জোস্টার নামের ভাইরাস এর জন্য দায়ী। ছোটবড়, নারি-পুরুষ ভেদে সকল বয়েসিরাই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তবে শিশুদের মধ্যে আক্তান্তের হার বেশি হয়ে থাকে।


কিভাবে ছড়ায়?
কাশি-হাঁচি, এমনকি ত্বকের সংস্পর্শে এলেও অন্যরা এতে আক্রান্ত হতে পারে। রোগটি ছড়াতে শুরু করে ত্বকে গুটি দেখা দেওয়ার দুদিন আগে থেকেই। আর ছড়াতে থাকে যদ্দিন না সব কটি গুটি শুকিয়ে যায়। তাই আক্রান্ত রোগী অনেক সময় নিজে বুঝে ওঠার আগেই রোগ ছড়াতে থাকে।

লক্ষণঃ
= আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসার ১০-২১ দিনের মধ্যে এ রোগের লক্ষন প্রকাশ পেয়ে থাকে। 
= ত্বকে ফুস্কুড়ি প্রকাশ পাওয়ার ২-৩ দিন পূর্বেই জ্বরের ভাব হয়,শরীরে বেথা অনুভূত হয়ে থাকে। পেটে বেথা হতে পারে। 
= ফুস্কুরিতে চুলকানি ও জ্বালা-পোড়া অনুভূতি হতে পারে। 
= ফুস্কুরিতে পরবর্তীতে পানি আসে এবং সবশেষে শুকনো কাল বর্ণের খোসা তৈরি হয়ে থাকে।
= এ রোগ এর স্থায়িত্ব ১৫-৩০ দিন হতে পারে।

চিকিৎসাঃ
ভাইরাস জাতিও রোগ বিধায় এ রোগের কোন চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। সাবধানতা অবলম্বন করলে কদিন পর এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। তবে লক্ষণ অনুসারে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করা যায়। যেমন জ্বর ও চুলকানির তীব্রতা কমানোর জন্য ওষুধ দেয়া যেতে পারে।

জটিলতাঃ 
আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শ্বাসনালীর সংক্রামণ,পাতলা পায়খানা ইত্যাদি দেখা দিয়ে জীবনহানির কারন হতে পারে। ত্বকে ব্যাকটেরিইয়া জনিত সংক্রামণ হতে পারে। সংক্রামণ পরবর্তীতে ত্বকে গর্ত থেকে যেতে পারে।

প্রতিরোধঃ
= আক্রান্ত রোগীকে পৃথক করার মাধ্যমে এ রোগের সংক্রামণ অনেকাংশেই কমানো যায়।
= শিশুকে এ রোগের প্রতিরোধক ওষুধ দিন।

সতর্কতাঃ
= আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে দিন। জলবসন্তে মাছ-মাংস নিষেধ বলে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে,বরং এগুলো বেশি খেতে দিন।
= ত্বকের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। সম্ভব হলে প্রতিদিন গোসল করান। 
= গোসল শেষে বেশী চেপে মুছতে যাবেন না। বাতাসে শুকিয়ে নিন।
= ত্বকের ফুসকুড়ি খুঁটবেন না, এগুলো স্বাভাবিকভাবেই শুকাবে। হালকা আরামদায়ক সুতির কাপড় পরান। 
= চুলকানি কমাতে ওলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
= শিশু, গর্ভবতী নারী, ডায়াবেটিক ও ক্যানসার রোগী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, এমন রোগীর ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা নিন। কারন এদের জলবসন্ত থেকে মারাত্মক নিউমোনিয়া বা অন্যান্য জটিলতা হতে পারে।
= বাচ্চাদের চিকেন পক্স হলে কখনোই এসপিরিন খাওয়াবেন না। এটি থেকে অন্য একটি রোগ Reye's Syndrome এর উদ্ভব হতে পারে। এই রোগ থেকে শিশুর লিভার, ব্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমনকি মৃত্যু ও হতে পারে।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Tuesday, November 19, 2013

মাথার উকুন দূর করার উপায়!

মাথার চুলে উকুন হওয়া একটা খুবই বিড়ম্বনার ব্যাপার। দেখা গেলো আপনি খুব সুন্দর করে চুল আঁচড়ে খোপা বেঁধেছেন, তারপর দেখলেন উকুনের কারণে একটু পর পর মাথা চুলকাতে হচ্ছে কি লজ্জার ব্যাপার বলুন তো। বাজারে উকুন নাশক শ্যাম্পু পাওয়া যায় কিন্তু অনেকের চামড়া খুব সেনসেটিভ হওয়ার কারণে এসব শ্যাম্পু ব্যবহার করলে কেমিক্যাল রিএকশান হয়ে উলটা আরও চর্ম রোগ দেখা দিতে পারে । তাই আসুন জেনে নেই মাথার উকুন দূর করার কিছু উপায়!




উকুন কিভাবে হয় বা ছড়ায়?
উকুন সাধারণত শিশুদের মাধ্যমে বেশি ছড়ায়। এক শিশুর জামা কাপড়, চুল থেকে আরেক শিশুর মাথায়, কাপড়ে উকুনের ডিম ছড়াতে পারে। যেসব শিশু স্কুলে পড়ে তাদের ক্ষেত্রে এরকম বেশি হয়। উকুন আছে এমন কেউ যদি কোথাও মাথা লাগিয়ে বসে তখন তার মাথা থেকে উকুনের ডিম সেখানে লেগে যেতে পারে। তারপর ঐ এক-ই স্থানে অন্য কেউ মাথা রাখলে তার মাথায়-ও উকুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেমন বড় বড় সোফা গুলোতে আমরা মাথা সোফার সাথে লাগিয়ে বসি বেশির ভাগ সময়। এক-ই সুইমিং পুল বা এক-ই পুকুরের পানির মাধ্যমে উকুন ছড়াতে পারেনা। কারণ উকুন সাঁতার পারেনা। একজনের মাথার সাথে আরেকজনের মাথা লেগে থাকলে সেক্ষেত্রে উকুন ছড়াবে। যেমন- সন্তানের মাথায় উকুন থাকলে মায়ের মাথায় আসবেই। এক-ই চিরুনি, তোয়ালে ব্যবহারের মাধ্যমেও ছড়ায়।

উকুন দূর করার উপায়ঃ
-> সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে নিট কম্ব (উকুনের ডিম পরিষ্কারের জন্য চিরুনি) ব্যবহার করা। এই চিরুনি নিউমার্কেট সহ যে কোন দোকানেই পাওয়ার কথা। চুল গুলো কে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে প্রথম ১ সপ্তাহ দিনে ৩ বার করে চুল আঁচড়াবেন। ১ সপ্তাহ পরে শুধু রাতে আঁচড়াবেন। ফলে উকুনের ডিম এবং একদম নতুন যে উকুন রয়েছে মাথায় সেগুলো দূর হয়ে যাবে। নিট কম্ব ব্যবহার করার পরে তা অবশ্যই ১০/১৫ মিনিট চুলায় রাখা গরম ফুটন্ত পানিতে রাখতে হবে আর নাহলে ৩০ মিনিট ভিনেগারে চুবিয়ে রাখতে হবে।



-> চুল ভালো মত আঁচড়ে নিন। এরপর কন্ডিশনার দিন চুলে। কিছুক্ষণ চুলে এভাবে কন্ডিশনার রেখে দিন। যেহেতু কন্ডিশনার খুব পিচ্ছিল তাই বড় উকুন গুলোর চুলের সাথে আটকে থাকা বা চলা ফেরা করা খুব-ই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এবার নিট কম্ব দিয়ে আঁচড়ে নিলে উকুন আর চুলের সাথে লেগে থাকতে পারবেনা।



-> ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল ২ টেবিল চামচ পাতি লেবুর রস ২ টেবিল চামচ নিমপাতার রস উপরের সব গুলো উপাদান এক সাথে মিশিয়ে অথবা ব্লেনড করে তারপর মাথার চুলের গোড়ায় গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন ১ ঘণ্টা। ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগান। এই ভাবে সপ্তাহে যদি ২ বার চুলের যত্ন করেন ভেষজ উপায়ে তাহলে আপনি মুক্তি পাবেন যন্ত্রণা দায়ক উকুন থেকে।

-> ১০/১২ টি রসুনের কোয়া পেস্ট করে নিন। সাথে ২/৩ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার আধা ঘণ্টা পেস্ট টি মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। চুলে লাগানোর দরকার নেই। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন করতে হবে।

-> শ্যাম্পু করার আগে একবার আর শ্যাম্পু করার পরে আরেকবার অ্যাপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে পুরো চুল ভিজিয়ে নিন। অথবা চুল ভিনেগার দিয়ে ভালো ভাবে ভিজিয়ে ৩/৪ মিনিট রেখে দিন। এইটুকু সময় শুকনো তোয়ালে দিয়ে চুল আলতো ভাবে মাথার উপর উচু করে বেঁধে রাখবেন। ৩/৪ মিনিট পর নিট কম্ব দিয়ে আঁচড়ে নিন।

-> চুল বার বার শ্যম্পু করলে উকুন দূর করা যায় না বরং এতে তাদের লাভ হয়। বার বার শ্যাম্পু করার ফলে মাথার ত্বকের তেল ধুয়ে চলে যায়, ফলে রক্ত নিতে উকুনের আরও বেশি সুবিধা হয়।

-> যে কোন ফেইসওয়াশ চুলে লাগান। এরপর একবার চুল আঁচড়ে নিন অতিরিক্ত ফেইসওয়াশ দূর করার জন্য। এখন হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিন। এর ফলে উকুন নিঃশ্বাস নিতে পারবেনা। কিন্তু এই পদ্ধতি রাতে করলে ভালো কারণ চুলে ফেইসওয়াশ প্রায় ৮ ঘণ্টার বেশি রাখতে হবে যেহেতু উকুন নিঃশ্বাস না নিয়ে প্রায় ৮ ঘণ্টার মত বেঁচে থাকতে পারে। সকালে চুল ধুয়ে ফেলবেন। আর সাথে অবশ্যি বালিশের কাপড়, বিছানার চাদর গরম পানিতে ধুয়ে ফেলবেন। এটা প্রতি সপ্তাহে ২/৩ দিন করতে পারেন উকুন মারার জন্য।

কখন ডাক্তার দেখাবেনঃ
প্রায় সব ক্ষেত্রেই ঘরোয়া চিকিৎসাতেই উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিন্তু ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন যদিঃ-

১. যদি আপনি ত্বকে ঘটিত চুলকানির কোন কারণ না পান; কেননা অন্যান্য গোটা বা সংক্রামক রোগের লক্ষণের সাথে উকুন ঘটিত খোস-পাচড়ার লক্ষণের মিল দেখা যেতে পারে।
২. যদি আপনার দেহে খোস-পাঁচড়ার কোন লক্ষণ দেখা যায়|
৩. যদি সেরে ওঠার পর আবারও আপনি এই রোগে আক্রান্ত হোন|
৪. যদি আপনার ক্ষতগুলো সংক্রামিত হতে শুরু করে এবং সে ক্ষতস্থান থেকে তরল নিসৃত হয়।
৫. যদি আপনার চোখের পাপড়িতেও উকুনের ডিম বা নিক পাওয়া যায়|
৬. যদি শিশু বা ছোট বাচ্চা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়|
৭. যদি চুলকানির প্রকোপে আপনি অতিষ্ট হয়ে ওঠেন|
৮. যদি আপনার শরীরে গোটা ওঠে কিংবা চিকিৎসার জন্যে ব্যবহার্য শাম্পু ব্যবহারের পর যদি আপনার অবহা আরও খারাপ হয়।

সতর্কতাঃ
-> কখনো নিজের চিরুনি, বালিশ, হেয়ার ব্যান্ড, তোয়ালে, কাপড় ছাড়া অন্যেরটা ব্যবহার করবেন না।
-> সপ্তাহে এক দিন বালিশের কাভার গরম সাবান পানিতে ধুবেন।
-> নিট কম্ব আর সাধারণ চিরুণি সব সময় পরিষ্কার করবেন। ভিনেগারে আধা ঘণ্টা করে চুবিয়ে রাখলে ভালো।
-> উকুন এবং খোস-পাঁচরার দমনে যে রাসায়নিক দ্রব্যগুলোর ব্যবহার চলছিল, সেগুলো ইদানিং আর ব্যবহার করা উচিত নয়, কেননা এগুলো নিউরোটক্সিন বা বিষাক্ত এবং এগুলো আপনার মধ্যে অন্যান্য সমস্যারও উদ্রেক করতে পারে। তাই ডাক্তারের কাছে বিকল্প কোন পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়ে পরামর্শ নিন।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য। ধন্যবাদ।

Monday, November 18, 2013

দাঁতের রোগ দন্তক্ষয় বা Dental Caries !

আজ সাধারণ ভাবে পরিচিত দাঁতের পোকা নিয়ে আলোচনা করবতবে আলোচনার শুরুতেই বলে দিতে চাই দাঁতে পোকা হয় না; হয় দন্তক্ষয়। 


দাঁতের যে রোগটি নিয়ে জনমনে সবচেয়ে ভুল ধারণা আসন গেড়ে বসেছে তার নাম হলো দাঁতের ক্ষয় রোগচিকিৎসকরা একে ডেন্টাল ক্যারিজ বলে থাকেন কিন্তু অনেকেই একে দাঁতের পোকা হিসেবে অভিহিত করেনঅথচ দাঁতে কোনো পোকা হয় না বরং এসিডের কারণে ডেন্টাল ক্যারিজ মানে দাঁতের ক্ষয়রোগ ঘটে থাকে

দন্তক্ষয়ের ফলে দাঁতে যে ধরনের ক্ষুদ্র গর্তের সৃষ্টি হয় সেখান থেকে পোকা বের করে দেখানো হয় অথচ কথিত এই পোকার দাতের ওই ক্ষুদ্র গর্তে মোটেও জায়গা হওয়ার কথা নয়অথচ অনেকেই এই অতি ক্ষুদ্র গর্ত থেকেই এক বা একাধিক পোকা বের করে দেখানআমাদের গা গরম থাকেগরম থাকে আমাদের মুখগহববরওকাজেই আমাদের মুখের মধ্যে যে স্বাভাবিক তাপ থাকে অথবা আমরা যখন গরম কোনো খাবার দাবার বা চা, দুধ ইত্যাদি পান করি সে অবস্হায় ওই ধরনের পোকা বেঁচে থাকতে পারবে না। আলোচনার শুরুতেই তাই স্পষ্ট ভাষায় আমরা বলে দিতে চাই, জীবিত মানুষের দাঁতে কখনো কোনো অবস্থায়ই পোকা হয় নাদাঁতে যা হয় তার নাম দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ

অতি ধীরে ধীরে অব্যাহত গতিতে এই রোগের বিকাশ হয়কেনো এই রোগ দেখা দেয়? মুখে জমে থাকা খাদ্যদ্রব্য বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার মুখগহ্বরের বিভিন্ন রোগজীবাণু ভেংগে ফেলে যাকে বিপাক ক্রিয়া বলা হয়আর এই ক্রিয়ার উপজাত হিসেবে ল্যাকটিক এসিড, এসিটিক এসিড, পাইরোভিক এসিড সহ নানা ধরনের এসিড তৈরি হয় সব ফলে আমাদের মুখের ভেতরে এসিডের আক্রমণ ঘটেএসিডের এই আক্রমণের ফলে দাঁত থেকে ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের মত গুরুত্বপুর্ণ খনিজসমুহ দাঁতের উপরিভাগের অংশ এনামেল থেকে বের হয়ে যায়আর এভাবেই দাঁতের ক্ষয়রোগ দেখা দেয়

দন্তক্ষয় দাঁতের বিভিন্ন জটিলতার প্রারম্ভিক অবস্থা। 

নিচের চার্ট থেকে দন্তক্ষয়ের ধারাবাহিক পরিনাম বোঝা যেতে পারেঃ                 

  প্রাথমিক অবস্থা               →              মাধ্যমিক অবস্থা            →               চূড়ান্ত অবস্থা
   দন্তক্ষয়(Caries)                             দন্তমজ্জা প্রদাহ(Pulpitis)                              পরিদন্ত প্রদাহ(Periodontitis)
                                                                                                                     ↓
                                                                                                            জটিলতা সমুহ
                                                                                                          (Periapical Cyst,
                                                                                                             Osteomyeliti,
                                                                                                               Cellulitis)

প্রাথমিক অবস্থাঃ জীবানু আক্রমনের ফলে দাঁতের গায়ে সৃষ্টি হয় অতি ক্ষুদ্র গর্ত যা শুরুতে দাঁতের উপর একটি কালো দাগ বা ফোটার মত দেখা যায়; যা ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে। এবং এই গর্ত দাঁতের গভীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বিভিন্ন উপসর্গ তৈরী করে। প্রাথমিক অবস্থায় Thermal sensitivity বা ঠান্ডা বা গরম পানিতে “শিরশির করা” উপসর্গ তৈরী হয়।

মাধ্যমিক অবস্থাঃ প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহণ না করলে Caries ধীরে ধীরে আরো গভীর হয়ে দাঁতের মজ্জায়(Pulp) পৌঁছে যেতে পারে। জীবানুর আক্রমন দাঁতের মজ্জার নরম টিস্যুতে প্রদাহ (Inflamation) তৈরী করে এবং এর ফলে সৃষ্টি হয় অসহনীয় তীব্র ব্যাথা। দাঁতের এই অবস্থাকে বলা হয় Pulpitis বা দন্তমজ্জার প্রদাহ। দাঁত থেকে সৃষ্ট এই ব্যাথা চোয়াল, কান, চোখ বা মাথায় ছড়িয়ে পড়তে বা অনুভূত হতে পারে। এই অবস্থায় শুধু Antibiotic বা ব্যাথার ঔষধে তেমন কোন উপকার হয় না। এই প্রদাহ (Pulpitis) এর ফলে কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিনের ভেতরই দাঁতের মজ্জার রক্তনালী নষ্ট হয়ে যায় এবং মজ্জার স্নায়ুতন্তু (Nerve fiber) ও আন্যান্ন কোষ-কলাও নষ্ট হয়ে যায় বা পঁচে যায়। স্নায়ু-তন্তু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ দাঁতের ব্যাথা চলে যায়। এ অবস্থায় রোগ ভালো হয়ে গেছে বলে রোগী মনে করে থাকে। প্রকৃতপক্ষে দাঁতটি মরে (Non vital) যায়।

চূড়ান্ত অবস্থাঃ সময়মতো উপযুক্ত চিকিৎসা করা না হলে মরে যাওয়া (Non vital) দাঁতের পঁচা মজ্জা (Necrosed Pulp) থেকে নির্গত রস ও জীবানু ক্রমে দাঁতের শিকড়ের অগ্রভাগের সুস্থ্য টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। শিকড়ের অগ্রভাগের টিস্যুতে জীবানুর আক্রমনে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় দাঁত খুবই স্পর্শকাতর থাকে। ফলে কামড় দিলেই ব্যাথা হতে পারে। ব্যাথার তীব্রতা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। তীব্র প্রদাহের ফলে সেখানে পূঁজ (Peri Apical Abscess) তৈরী হয়। এই পুঁজ দাঁতের ক্ষয়প্রাপ্ত পথে বেড়িয়ে আসতে পারে। তবে এই পথ কোন ভাবে বন্ধ হয়ে গেলে এবং পুঁজ বেড়িয়ে আসতে না পারলে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

আমরা জানি, রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়। কাজেই যে কারণে দাঁতের ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় রোগ হয়, সে কারণগুলো দূর করতে পারলে এ রোগের হাত থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়।


প্রতিরোধের উপায়ঃ

১/ প্রতিবার খাওয়ার পর দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে, বিশেষ করে, রাতে ঘুমানোর আগে টুথ ব্রাশ, পেস্ট ও নাইলনের সুতা দিয়ে দাঁত এবং দাঁতে লেগে থাকা খাদ্য কণা পরিষ্কার করতে হবে।

২/ দাঁত পরিষ্কারের অর্থ শুধু দাঁত পরিষ্কারই বোঝায় না, দাঁত, মাড়ি ও জিহ্বা, দুই দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাবারসহ মুখের সর্বত্র লেগে থাকা আঠালো জীবাণুর প্রলেপ দূর করা বোঝায়।

৩/ খাওয়ার পর কেবল কুলকুচি করলে জীবাণু দূর হয় না। যেভাবে যা দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করুন না কেন, দাঁত এবং দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাবার যাতে ভালোভাবে পরিষ্কার হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

৪/ ঘন ঘন চিনি-জাতীয় খাদ্য যেমনঃ-  চকলেট, বিস্কুট, আইসক্রিম ইত্যাদি মিষ্টি-জাতীয় খাবার কম খাওয়া কিংবা খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে মুখ পরিষ্কার করা জরুরি।

৫/ রাতে ঘুমের মধ্যে শিশুদের বোতলের দুধ কোনোভাবেই খাওয়ানো উচিত নয়। কোনো বিশেষ কারণে যদি খওয়াতেই হয়, তবে সে ক্ষেত্রে শিশুর দাঁত সঙ্গে সঙ্গে ভেজা পাতলা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

৬/ ছয় মাস পর পর অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসকের উপদেশ ও পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৭/ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দাঁতের ক্যারিজের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। যেমন—খাবার পানিতে পরিমাণমতো ফ্লুরাইডযুক্ত করা, দাঁতের গায়ে ফ্লুরাইডের দ্রবণ বা জেল লাগিয়ে দেওয়া, ফ্লুরাইডের দ্রবণ দিয়ে কুলি করা, ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা, দাঁতের নাজুক স্থানে আগাম ফ্লুরাইডযুক্ত ফিলিং করিয়ে নেওয়া ইত্যাদি।

৮/ ব্যথার কারণে দাঁত ফিলিং করা সম্ভব না হলে কিংবা ফিলিং করার পর ব্যথা শুরু হলে অথবা দাঁতের শাঁস নষ্ট হয়ে মাড়ি ও চোয়াল ফুলে গেলেও বর্তমানে দাঁতটিকে না তুলে বিশেষ এক আধুনিক চিকিৎসা রুট ক্যানেলের মাধ্যমে দাঁতটি অপারেশন করে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।


আশার কথা হচ্ছে, অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের মতো দাঁতের ক্যারিজ প্রতিরোধের টিকা পরীক্ষাধীন আছে, যা ব্যবহারে রোগীরা অতি সহজেই দন্তক্ষয় বা ক্যারিজের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।

আপনাদের সুখী জীবনই আমাদের কাম্য । ধন্যবাদ।